মুম্বই: এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদীকে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী বলে ঘোষণা করল মুম্বইয়ের এক বিশেষ আদালত। ২০০ কোটি মার্কিন ডলার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত নীরব দেশের দ্বিতীয় শিল্পপতি যিনি এই তকমা পেলেন। ২০১৮-র আগস্ট কার্যকর হওয়া পলাতক আর্থিক অপরাধী (এফইও) আইনের বিভিন্ন ধারায় এর আগে পলাতক আর্থিক অপরাধী ঘোষিত হন বিজয় মাল্য। প্রাক্তন কিংফিশার বিমান সংস্থা ও প্রথম সারির মদ ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ না করে দেশ থেকে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ।
আজ পলাতক নীরব ও ইডি-র আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর নীরবকে পলাতক আর্থিক অপরাধী ঘোষণা করেন বেআইনি অর্থ লেনদেন রোধ আইন আদালতের বিশেষ বিচারক ভি সি বারদে। তাঁকে পলাতক আর্থিক অপরাধী ঘোষণার জন্য ইডি-র আবেদন খারিজ করতে আগেই আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন নীরব।
নীরব ও তাঁর কাকা মেহুল চোকসি পিএনবি কেলেঙ্কারি মামলায় মূল অভিযুক্ত। ২০১৮র জানুয়ারি এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার আগে দুজনেই ভারত ছেড়ে পালান। ২০১৯-এর মার্চে লন্ডনে গ্রেফতার হন নীরব। তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের মাধ্যমে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে।
২০১৮-র জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডি তাঁকে পলাতক আর্থিক অপরাধী ঘোষণার জন্য নতুন কার্যকর হওয়া এফইও আইনে আবেদন জানায়। তাঁর আইনজীবী সওয়াল করেন, এফইও আইনে সুরাহা পাওয়ার জন্য বেআইনি আর্থিক লেনদেন আইনে নথিবদ্ধ হওয়া তথ্যপ্রমাণ ও বিবৃতির ওপর ভরসা করেছে ইডি, যা এফইও আইনে গ্রাহ্য নয়।
তদন্তকারী এজেন্সির বক্তব্য অনুসারে নীরব ও মেহুল কিছু ব্যাঙ্ক কর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে জাল লেটার অব আন্ডারটেকিং বা বোঝাপড়াপত্র বের করিয়ে পিএনবি-র সঙ্গে ১৪ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা করেছেন। জালিয়াতি সামনে আসার আগে ২০১১-র মার্চ পর্যন্ত পিএনবির মুম্বই শাখা এই বোঝাপড়াপত্রগুলি নীরবের কোম্পানিগোষ্ঠীকে ইস্যু করে বলে অভিযোগ।
এফইও আইনে কাউকে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী ঘোষণা করা হয় যদি তার বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থমূল্যের অপরাধের ব্যাপারে পরোয়ানা জারি হয় এবং তিনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়ে ফিরতে রাজি না হন।