বেঙ্গালুরু: ফের জুলুমের (harrasment) অভিযোগ পুলিশের (police) বিরুদ্ধে। কলকাতার পর এবার ঘটনা বেঙ্গালুরুতে (bengaluru)। অভিযোগ, মাঝরাতে রাস্তায় 'হাঁটার অপরাধে' এক দম্পতিকে (couple) তিন হাজার টাকা জরিমানা (fine) করেন পুলিশকর্মীরা (police)। পরে অবশ্য ১ হাজার টাকায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু রাতের রাস্তায় দুজন প্রাপ্তবয়স্ক হাঁটতে পারবেন না, এমন নিয়ম কোথায়? এই প্রশ্নেই তোলপাড় শুরু কর্নাটক-সহ দেশের নানা প্রান্তে। খবর ছড়াতেই তদন্ত শুরু করা হয়। যে থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেই, সমপিঘেয়াল্লি পুলিশ স্টেশনের হেড কনস্টেবল ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
হইচই শুরু কার্তিক পাত্রি নামে এক যুবক ট্যুইট ঘিরে। বেঙ্গালুরু সিটি কমিশনার অফ পুলিশের সাহায্য় চেয়ে তাঁদের ভোগান্তির কথা ট্যুইট করেন কার্তিক। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির কাছেই এক জায়গায় এক বন্ধুর বাড়িতে কেক কেটে ফিরছিলেন কার্তিক ও তাঁর স্ত্রী। ঘড়িতে তখন সাড়ে বারোটার কিছু বেশি। হঠাৎ তাঁদের বাসভবনের দরজার কয়েক মিটার আগেই পথ আটকান দুই পুলিশকর্মী। কার্তিক ও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়। প্রশ্ন আসে, 'আচমকা কেন পরিচয়পত্র দেখাতে যাব?' তাও তাঁদের মোবাইল ফোনে থাকা আধার কার্ডের ছবি দেখিয়েছিলেন কার্তিকরা। হঠাৎ মোবাইলদুটি কেড়ে নেন পুলিশের উর্দিধারী ওই ব্যক্তি, অভিযোগ এমনই। ব্যক্তিগত তথ্য জানতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। কার্তিক লেখেন, 'এর মধ্যেই দেখি, এক জন চালান-বই বের করে নাম-পরিচয় সব লিখে রাখছেন। আধার নম্বরও লিখে রাখা হচ্ছে। বিপদ আঁচ করেই জিজ্ঞাসা করি, কীসের চালান এটা?' তখনই জবাব, রাত ১১টার পর রাস্তায় ঘোরা নিষিদ্ধ, অভিযোগ ওই যুবকের।
তার পর...
এমন কোনও নিয়মের কথা যে তাঁরা জানতেন না সেটিও স্পষ্ট লিখেছেন কার্তিক। কিন্তু রাতবিরেতে অশান্তি বাড়াতে চান না। নম্রভাবে 'ক্ষমা' চান পুলিশকর্মীদের কাছে। তার পরও চিড়ে গলেনি। অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হয়। কার্তিকের লেখায়, 'বুঝতেই পারছিলাম কোনও নিরীহ মানুষকে পাকড়ে অর্থ বের করার ছক ছিল ওঁদের। আমরা স্রেফ ওঁদের খপ্পরে পড়ে গিয়েছি। যতই ওঁদের অনুনয়-বিনয় করছিলাম, ততই ওঁরা খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি গ্রেফতারির হুমকিও দেন।' বিপদ ভেবে তখন কাঁদতে শুরু করে দিয়েছেন কার্তিকের স্ত্রী। এই অবস্থায় হয়তো অন্য কোনও প্রমাদ গুণেছিলেন অভিযুক্তরা, ধারণা যুবকের। তাঁর মতে, কোনও মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তাঁরা সুর নরম করেন। কার্তিককে আলাদা ডেকে বলেন, ১ হাজার টাকা দিলেই বিষয়টি মিটে যাবে। অত টাকা সেই সময় নগদ ছিল না দম্পতির কাছে। শেষমেশ PayTM QR code-র মাধ্যমে টাকা মেটান তাঁরা, দাবি দম্পতির। গোটা বিষয়টি যে ভাবে ট্যুইটারে তাঁরা পোস্ট করেছেন, তাতে পুলিশের তরফ থেকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে কার্তিককে। সঙ্গে আশ্বাস, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হবে।
আরও পড়ুন:উনি এ রাজ্যেরই বিরোধী নেতা তো! টেট প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ভুয়ো, শুভেন্দুকে জবাব ব্রাত্যর