পানাজি: বিধানসভা নির্বাচনের আগে গোয়ায় (Goa) ক্রমশ মুঠো আলগা হচ্ছে কংগ্রেসের (Congress)। ভোটের দিন যত সামনে আসছে, ততই একে একে দল ছাড়ছেন তাবড় প্রভাবশালী নেতা। শুক্রবার প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর (Priyanka Gandhi) আগমন ঘিরে যখন প্রস্তুতি তুঙ্গে, সেই সময় ফের সেখানে দল ছাড়লেন একঝাঁক কংগ্রেস নেতা-কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহই নেই কংগ্রেসের। তাই অন্য রাস্তা দেখতে হচ্ছে তাঁদের।


শুক্রবার গোয়ায় প্রিয়ঙ্কার হাত ধরে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগে সকালে পোরবোরিম বিধানসভা কেন্দ্রের একঝাঁক নেতা কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন। কংগ্রেস ছেড়ে কোন দলের হাত ধরছেন, তা যদিও স্পষ্ট করেননি তাঁরা। তবে স্থানীয় জেলা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন নেতা গুপেশ নায়েক বলেন, ‘‘আসন্ন গোয়া বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে না। দল ক্রমশ দৌঁড় থেকে ছিটকে যাওয়ার পিছনে কিছু নেতার আচরণই দায়ী।’


দলত্যাগী এই একঝাঁক নেতার মধ্যে রয়েছেন মোরেনো রেবেলো। দক্ষিণ গোয়ায় এত দিন কংগ্রেসের অন্যতম প্রভাবশালী এবং অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। দলবিরোধী কাজে লিপ্ত থাকায় অভিযুক্ত বিধায়ক অ্যালেক্সিও রেজিনাল্ডো লরেন্সো-কে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় কংগ্রেস ছাড়লেন তিনি, এমনটাই জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিগত সাড়ে চার বছরে দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি লরেন্সোকে। বরং প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে কটূক্তি করে এসেছেন। কোন যুক্তিতে তাঁকে প্রার্থী করা হল, জানি না।’’


আরও পড়ুন, ভোটে প্রার্থী বাছাইয়ে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, মহুয়া মৈত্রর নাম করে কড়া বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের


আবার গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি (জিএফপি)-র সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়েও মতান্তর দেখা দিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে।  গোয়ায় দলের নির্বাচনী কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা পি চিদম্বরম যদিও জানিয়েছেন যে, জিএফপি শুধু কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছে। এই মুহূর্তে এই বোঝাপড়াকে জোট বলে উল্লেখ করা উচিত নয়। কিন্তু চিদম্বরমকে টপকে জিএফপি প্রধান বিজয় সরদেশাইয়ের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব গিয়েছেন গোয়া কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও।  


ভোটের আগে, দলের মধ্যে এই বিপরীত অবস্থান পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল করে তুলছে বলে মনে করছেন দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের আশঙ্কা, এক দিকে তৃণমূল এসে গোয়া কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছে। রাহুল গাঁধীও তা আটকাতে পারেননি। তাই ভেবেচিন্তে প্রিয়ঙ্কাকে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা এসে পৌঁছনোর আগেই যে ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে নেতা-কর্মীরা ইস্তফা দিচ্ছেন, তাতে বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যাবে কি না, তা ভাবাচ্ছে গোয়া কংগ্রেসকে।