ঋত্বিক মণ্ডল, কলকাতা: বিমানবন্দরের সাংবাদিক আর অনুগামীদের ভিড় ঠেলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তখন ধীরে ধীরে 3C গেটের দিকে এগোচ্ছেন। তার আগে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে তাঁকে । অনুগামীদের ভির তাকে ঘিরে রেখেছে । রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিমানবন্দরে পা রাখতেই সমস্বরে স্লোগান উঠল ''কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে... রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরে ঘরে"। আবার "কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে... বিজেপি ঘরে ঘরে"। এবার ফিরে তাকালেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।


শহর ছাড়ার আগে তৃণমূল ত্যাগী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অনুগামীদের চাঙ্গা করতে যা বললেন তা তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করছে। তিনি অনুগামীদের বলেন, "আমি তোমাদের বলতে চাই, আমি যদি আজ যোগ দিই , তাহলে আগামিকাল তোমরা সবাই ডুমুরজলার মিটিং-এ এসো।’’ আবার শোনা গেল "কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে... বিজেপি ঘরে ঘরে"।


রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষালদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছে জল্পনা, শনিবার সকালেই তাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যায় ।


দিল্লিতে ইজরায়েলি দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের পর তড়িঘড়ি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গ সফর বাতিল করতে হয়েছে। আগে ঠিক ছিল রবিবার হাওড়া ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের বিজেপির জনসভা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতা ও অভিনেতারা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেবেন। কিন্তু শনিবারই দিল্লি থেকে ডাক আসে রাজীবদের। ফোনে অমিত শাহের সঙ্গে কথা হয় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন বিকেল ৪:৪৭ মিনিটে একটি বিশেষ বিমানে কলকাতা থেকে দিল্লি যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল , রথীন চক্রবর্তীরা । তাদের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও।


সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের পর আজই দিল্লিতে বিজেপির পতাকা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা রাজীবদের। যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন , অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন আজই তিনি যোগ দেবেন কী না। আগামিকাল, রবিবার হাওড়ার বিজেপির 'যোগদান মেলায়' উপস্থিত থাকবেন স্মৃতি ইরানি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেখানে বক্তব্য রাখবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী । ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে অপরোধ করা হয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। শনিবার রাজীব-সহ অন্য নেতাদের নিয়ে দিল্লি গিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায় ।


তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেই বিজেপিমুখী স্লোগান শোরগোল ফেলেছে বঙ্গ রাজনীতিতে।