ইম্ফল : সেনার গুলিতে মৃত্যু নিয়ে ফুঁসছে নাগাল্যান্ড (Nagaland Killings)। তার মধ্যেই মণিপুরে আফস্পা (Armed Forces Special Powers Act) প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের (Congress)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির ঘোষণা, ক্ষমতায় এলে তুলে নেওয়া হবে আফস্পা। 


একই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিজেপি সরকারের উপরও আফস্পা প্রত্যাহারে চাপ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের উদ্দেশে তাদের আর্জি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানো হোক, যাতে সংসদে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীনই বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার (AFSPA) করে নেওয়া হয়।


শনিবার ইম্ফলে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেখানেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে আফস্পা প্রত্যাহারের কথা জানান প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তথা রাজ্যের বিধায়ক কিশাম মেঘচন্দ্র।


এ দিন নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডলে প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র নিগোম্বম বি মেইতেই-ও আফ্স্পা প্রত্যাহারের সপক্ষে সওয়াল করেন। তিনি লেখেন, ‘ক্ষমতায় থাকাকালীন মণিপুরের সাত বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করেছিল কংগ্রেস। যেমনটা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ২০২২-এ ক্ষমতায় ফিরলে, প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সত্ত্বর এবং সম্পূর্ণভাবে গোটা রাজ্য থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


তথাকথিত উপদ্রুত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অসম, মিজোরামের মত রাজ্য এবং জম্মু-কাশ্মীরে আফ্স্পা চালু রয়েছে। এর আওতায় একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হলে সতর্কবার্তা দিয়ে কারও উপর গুলিও চালাতে পারে সেনা। ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতারি, বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালানোর ক্ষমতাও দেওয়া রয়েছে সেনাকে। আফস্পার আওতায় সাধারণের অস্ত্র রাখাও নিষিদ্ধ।


দীর্ঘদিন ধরেই আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। সম্প্রতি নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনার গুলিতে ১৪ জনের মৃত্যুর পর সেই দাবি আরও জোরাল হতে শুরু করেছে। আফস্পার মাধ্যমে সেনার হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও। তিনি বলেন, ‘মধ্যযুগীয় এই কঠোর আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশে আইন রয়েছে। কিন্তু আফস্পা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’’


রিও-র এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিজেপি-র সঙ্গে জোট গড়েই রাজ্যে ক্ষমতায় তিনি। এবং কেন্দ্রের এনডিএ জোটেরও শরিক তিনি। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার গলাতেও একই সুর ধরা পড়েছে। তিনিও বিজেপি-র সঙ্গে জোট গড়ে সরকারে।