পানাজি: ভোট ভাগাভাগির কোনও অভিসন্ধি নেই তাঁর। সোমবার গোয়ায় পৌঁছে বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তার কিছু ক্ষণ পরই সেখানে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (NCP) ঘরে থাবা বসনারো অভিযোগ উঠল তাঁর দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কারণ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা গোয়ায় এনসিপি-র একমাত্র বিধায়ক চার্চিল আলেমাও এনসিপি পরিষদীয় দলকে তৃণমূলের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। মমতার উপস্থিতিতে সোমবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগও দেন তিনি।  


মমতার গোয়া সফরের মধ্যে সোমবার সকালেই বিধানসভার স্পিকার রাজেশ পটনেকরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন চার্চিল। চিঠি দিয়ে জানান, তৃণমূলের সঙ্গে মিশে গেল গোয়া এনসিপি-র পরিষদীয় দল। এখন থেকে তাঁকে তৃণমূল বিধায়ক হিসেবেই ধরা হোক। পরে সংবাদমাধ্যমে নিজেই সে কথা তুলে ধরেন চার্চিল। ফলে মেঘালয়ের মতো গোয়াতেও বিনাযুদ্ধেই বিধানসভায় প্রবেশ ঘটে গেল তৃণমূলের।


দলবদলের মরসুমে একসময় তাঁর ফুটবল ক্লাব রীতিমতো চর্চায় থাকত। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়ে গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্সের কর্তা নিজেই এবার চর্চার কেন্দ্রে। নিজের কেন্দ্র বেনাউলিমেই এ দিন জোড়াফুল শিবিরে যোগ দেন তিনি। তবে এই প্রথম নয়, কংগ্রেসে থাকাকালীন মেয়ে ভালাঙ্কা আলেমাও-কে টিকিট না দেওয়ায়, ২০১৪ সালে প্রথম তৃণমূলে যোগ দেন চার্চিল। সে বার তাঁকে দলে স্বাগত জানান বাংলার তৎকালীন মন্ত্রী মদন মিত্র।


সে বার দক্ষিণ গোয়া থেকে তৃণমূলের হয়ে লোকসভা নির্বাচনে লড়েন চার্চিল। কিন্তু বিজেপি-র নরেন্দ্র কেশব যাদবের কাছে পরাজিত হন। এর পর ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর এনসিপি-তে যোগ দেন। এনসিপি-র টিকিটেই বেনাউলিমে নির্বাচিত হন তিনি।







তবে চার্চিলকে দলে টেনে তৃণমূল যে ভাবে এ বার শরদ পওয়ারের এনসিপি-তে ভাঙন ধরাল, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি বিরোধী জোটকে একজোট করার বার্তা দিলেও, এ যাবৎ বিজেপি বিরোধী শিবিরেই ভাঙন ধরিয়ে চলেছে তাঁর দল।


চার্চিলকে দলে টানার পর মমতার সঙ্গে পওয়ারের সম্পর্কেও ফাটল ধরবে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার দাবি নিয়ে বার বার পওয়ারের দ্বারস্থ হয়েছেন মমতা। পওয়ারও বরাবরই বিরোধী জোটে মমতাকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে এসেছেন। চার্চিল তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সেই বোঝাপড়ায় ছেদ পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।