ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর : অধিকারীর পরিবারের সঙ্গে সংঘাত আরও তীব্র হল তৃণমূলের। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য হওয়ার পরই সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতা মামুদ হোসেন। পাল্টা চ্যালেঞ্জের সুরে অডিটের দাবি জানিয়েছেন সৌমেন্দু অধিকারী।


প্রথমে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ, তারপর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান করা। শুভেন্দু অধিকারী দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পরই ক্ষমতা খর্ব করা শুরু হয়েছিল তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর।

তিনিও বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে এবার শুভেন্দুর ছোট ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হল রাজ্যের শাসক দল।

তৃণমূল নেতা ও কাঁথি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য মামুদ হোসেনের অভিযোগ, 'কাঁথি পুরসভা জুড়ে ব্যাপকভাবে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে, স্টল ও কর আদায়ের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে, অস্থায়ী কর্মীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করত একটি পরিবার, এই নিয়ে তদন্ত করা হবে, দরকারে এফআইআর করা হবে।'

শুক্রবারই কাঁথি পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতে মামুদ হোসেনকে আনা হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধী হিসেবেই পরিচিত মামুদ। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে এগরা কেন্দ্রে ডিএসপি প্রার্থী হন তিনি। কিন্তু শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ফিরে আসেন তৃণমূলে।

আর পুরনো দলে ফিরে মামুদ হোসেন আক্রমণ করলেন সৌমেন্দুকে। যদিও পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে দেরি করেননি অধিকারী বাড়ির ছোট ছেলে। বিজেপি নেতা ও কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'অভিযোগ অনেকেই করতে পারেন, দরকার করলে অডিট করে দেখা হোক, ওনারা মুখে যেটা বলছেন তা প্রমাণ করে দিয়েছেন।' বিজেপি নেতা তথা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ কণিঙ্ক পণ্ডা বলেছেন, 'মামুদ হোসেনকে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূল, উনি নিজের গ্রামেই থাকতে পারেন না, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা পেয়েছেন।'

এই মুহূর্তে কাঁথির শান্তিকুঞ্জে অধিকারী বাবা শিশির অধিকারী ও সেজ ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলের সাংসদ। অন্যদিকে মেজ ছেলে শুভেন্দু ও ছোট ছেলে সৌমেন্দু যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর। তবে পরিবারকে আক্রমণ করলে ছেড়ে দেবেন না বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। কিন্তু তারপর অধিকারী বাড়ির ছোট ছেলেকে নিশানা করলেন তৃণমূল নেতা মামুদ হোসেন।