রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির এক সভায় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্যের কারণে বিতর্কে জড়ালেন গত ডিসেম্বরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুজাতা মণ্ডল খাঁ।  বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগে সরব বিজেপি। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা ওই মন্তব্য সমর্থন করে না। 


 


রাজ্যে ভোটের মুখে উত্তপ্ত হচ্ছে পরিবেশ। সেইসঙ্গে বইছে কুকথার স্রোত। এবার কুকথা বিতর্কে জড়ালেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। যিনি গত ডিসেম্বরেই দলের টানে ঘর ছেড়েছেন।  স্বামীর সঙ্গ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন দিদির দলে। গত মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ বিধনাসভা কেন্দ্রের সন্ন্যাসীকাটা এলাকায় লালস্কুল ময়দানে জনসভা ছিল তাঁর।  সেই জনসভা থেকেই প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করেন সুজাতা।  সেই মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যার সত্যতা এবিপি আনন্দ যাচাই করেনি।


 


তৃণমূলনেত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ বলেন, এবার বাংলার মানুষের ভোট কিনতে রবি ঠাকুর সাজা দরকার। রবি ঠাকুরের মেধা তো পাবে না। তাই দাড়িটাই রাখি।  আমি মিল পেলাম রাম ছাগলের সঙ্গে। দাড়ি রাখলে যদি রবি ঠাকুর হওয়া যেত তাহলে রামছাগলও রবিঠাকুর হত। রবি ঠাকুর হচ্ছে সাক্ষাত্‍ মা সরস্বতীর বরপুত্র।  সেখানে গুজ্জুভাই মোদিজি ভাবলেন দাড়ি রাখলেই রবি ঠাকুর হওয়া যায়।  কিন্তু আপনারা তাঁর সঙ্গে কার মিল পাচ্ছেন? দর্শক বলে, রামছাগল। উত্তরটা আপনারাই দিয়ে দিলেন।


 


এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সুজাতার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ সরব হয়েছে বিজেপি। জলপাইগুড়ির বিজেপি সহ সভাপতি অলোক চক্রবর্তী জানান, ‘‘উনি (সুজাতা) এমন একজন মানুষ, যিনি বিজেপিতে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এসেছিলেন।  বিজেপি যে তাঁর অপসংস্কৃতি বুঝতে পেরেছিল, তা আজ প্রমাণ হল।  এঁদের বিজেপি ঠাঁই দেয়নি, তাই এখন নতুন করে খবরের আলোয় আসার জন্য বিভিন্ন মন্তব্য করে মানুষের কাছে আসতে চাইছেন।  উনি যেভাবে  সংস্কৃতিকে নষ্ট করছেন, তাকে ধিক্কার জানাচ্ছি।’’


 


সুজাতার এই মন্তব্যে বিড়ম্বনায় পড়েছে রাজ্যের শাসক দল।  বিজেপির বিরুদ্ধে সামগ্রিকভাবে ভাষা সন্ত্রাসের অভিযোগ আনলেও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা সুজাতার ওই মন্তব্য সমর্থন করছে না। জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র দুলাল দেবনাথ জানান, ‘‘যারাই এটা বলে থাকুক, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে শালীনতা বোধ থাকা উচিত। যারাই বলে থাকুক, তৃণমূল ভাষার শালীনতা মেনেই চলে।  তেমনই নির্দেশ আছে। তবে ভাষা সন্ত্রাস শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপিই বাংলায় প্রথম ভাষার কুসংস্কৃতি চালু করেছে।’’


 


বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের ওই ভিডিও নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হবে।