রায়দিঘি: জল থেকে কখন উঠে আসবে দৈত্য? আশঙ্কার প্রহর গুণছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি অঞ্চল। এক বছর আগে ২০ মে এই সব এলাকা তছনছ করে দিয়েছিল অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান।
সেই তাণ্ডবের এক বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এবার রায়দিঘির রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সতর্কবার্তা। বে অফ বেঙ্গলে তৈরি হচ্ছে সাইক্লোন। বাংলার দিকে ধেয়ে আসার সম্ভাবনা তীব্র।
এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয় এড়াতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে নদীবাঁধ সারাইয়ে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন। গ্রামবাসীরা বলছে, 'বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ। আগের ঘুর্ণিঝড়ে বাঁধ ভেঙেছে। এবার আমরা আগেভাগে মাটি কেটে বাঁধ সারানোর কাজে হাত লাগিয়েছি।'
গত বছর আমফানের তাণ্ডবে একাধিক নদীবাঁধ ভেঙেছিল রায়দিঘি এলাকায়। কিছু বাঁধ নিচু থাকায় উপড়ে পড়েছিল জল। তার থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগেভাগেই নদীবাঁধ উঁচু করার কাজ চলছে। মথুরাপুর দু-নম্বর ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় সারানো হচ্ছে মণি নদীর বাঁধ। তাঁরা বলছেন, আমফানে বাঁধ ভেঙেছিল এর আগে। পুরো এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। আমরা আতঙ্কে। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে বাঁধ সারাচ্ছি
আমফানের ক্ষত আর স্মৃতি বুকে নিয়েই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে রায়দিঘি। মথুরাপুর দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জানিয়েছেন, 'আমফানের সময় বাঁধ ভেঙেছিল এখানে। কিছুটা সারাই করেছিল। কিছুটা খামতি থেকে গিয়েছে। আমরা তাই গ্রামবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে এই ঝড়ের আগে বাঁধ সারাচ্ছি।'
তবু গ্রামবাসীদের আশঙ্কা কাটছে না। বঙ্গোপসাগরের জলরাশি থেকে বিপুল শক্তি সঞ্চয় করে ইয়াস যদি শেষ পর্যন্ত সত্যিই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে, তাহলে কী হবে, সেটা চিন্তা করেই শিউরে উঠছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, হাওয়া অফিস সূত্র বলছে, পশ্চিমবঙ্গেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।২৩ তারিখ থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ২৫ তারিখ থেকে শুরু হবে বৃষ্টি। ২৬ তারিখ থেকে শুরু হবে ভারী বৃষ্টি। ২৫ তারিখ ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে হাওয়া। যদিও, আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে আমফানের থেকে কম শক্তিশালী হবে ঘূর্ণিঝড়।