পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দয়িতাপতি দিঘার মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়ে ওড়িশায় তুঙ্গে বিতর্ক। দিঘআর মন্দিরকে কেন ধাম বলা হচ্ছে, কেনই বা সেখানে গিয়েছিলেন দয়িতাপতি? এমন নানা  প্রশ্ন নিয়ে অশান্তি তুঙ্গে নীলাচলে। দীর্ঘ আলোচনার পর বড় পদক্ষেপ করল  শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (SJTA)। 

পশ্চিমবঙ্গের দিঘা জগন্নাথ মন্দিরের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর বর্ষীয়ান সেবায়েত রামকৃষ্ণ দাসমহাপাত্রকে ৩০ দিনের জন্য বরখাস্ত করল SJTA।  SJTA-এর প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ পাধীর এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দাসমহাপাত্রকে মন্দিরের সমস্ত দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে , তিনি এক মাসের জন্য পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে আচার-অনুষ্ঠান পালনও করতে পারবেন না। এছাড়াও নির্দেশ, বরখাস্তের সময়কালে মন্দিরের সেবা বা আচার-অনুষ্ঠানে তাঁকে বাধা দেওয়া হলে, তিনি কাউকে প্রভাবিত করতে পারবেন না বা হুমকি দিতে পারবেন না। যদি তিনি তা করেন, তাহলে বরখাস্তের সময়কাল বাড়ানো হবে । কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এই সময়ের মধ্যে, মন্দিরের কমান্ডার এবং সিনিয়র সুপারভাইজার নিয়মিতভাবে দশমহাপাত্রের আচরণ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেবেন। এই সময় যদি দাসমহাপাত্রের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ লক্ষিত হয়, তাহলে মন্দির প্রশাসন তার প্রাপ্য ভাতা আটকে দেবে। 

দিঘা থেকে ফেরার পরই দয়িতাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি ২০১৫ সালে নবকলেবর উৎসবের সময় সংগৃহীত পবিত্র কাঠ ব্যবহার করে দিঘা জগন্নাথ মন্দিরের জন্য প্রতিমা তৈরি  করেছেন? একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলেই তিনি দাবি করেছিলেন, পুরীর মন্দিরের উদ্বৃত্ত পবিত্র কাঠ দিয়ে দিঘা মন্দিরের জন্য প্রতিমা তৈরি করেছেন। তবে পরে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। 

রাজ্য সরকার তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারে দাশমহাপাত্র  ওই সংবাদমাধ্যমকে মিথ্যা বলেছিলেন । দিঘা মন্দিরের মূর্তিগুলি ভুবনেশ্বরের একজন শিল্পী তৈরি করেছিলেন। এছাড়াও দাশমহাপাত্রকে প্রশ্ন করা হয়, পুরীর একজন সেবায়েত হওয়া সত্ত্বেও তিনি কীভাবে  দিঘা মন্দিরে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ?  দিঘা জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্ট কর্তৃক মন্দিরটিকে ধাম হিসাবে উল্লেখ করার বিষয়ে তিনি আপত্তি করেছিলেন কিনা তাও ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। মন্দিরের প্রধান প্রশাসক পাধী জানান, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মন্দির সব সেবায়েতদের বার্তা দিতে চায়, তাঁরা যেন মন্দির প্রাঙ্গণের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখে।  তাঁদের কর্তব্য হল মন্দিরের ঐতিহ্য, আচার-অনুষ্ঠান এবং মর্যাদাকে আত্মম্ভরিতার ঊর্ধ্বে রাখা। 

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিঘা জগন্নাথ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বিতর্কে অনৈতিকভাবে জড়িত থাকার জন্য দশমহাপাত্রকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।