নয়াদিল্লি: পাঁচ বছর আগে তাঁর মুখরক্ষা করেছিল ওয়েনাড। কিন্তু রায়বরেলী ধরে রাখতে সেখান থেকে সরতে হচ্ছে রাহুল গাঁধীকে। সোমবার লোকসভায় শপথ নেওয়ার আগে তাই ওয়েনাডবাসীকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সাংসদ। ওয়েনাডকে বিদায় জানাতে গিয়ে চিঠিতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন রাহুল। জানিয়েছেন, আগামী দিনেও ওয়েনাড বাসী তাঁকে বিপদে আপদে পাশে পাবেন। (Rahul Gandhi)


সোমবার ১৮তম লোকসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। নবনির্বাচিত সাংসদরা সেখানে শপথগ্রহণ করবেন। তার আগে শনিবার ওয়েনাডবাসীর উদ্দেশে চিঠি লিখলেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, 'পাঁচ বছর আগে আপনাদের সংস্পর্শে আসা। প্রথমবার আপনাদের সমর্থন চাইতে গিয়েছিলাম। আপনাদের কাছে আমি ছিলাম অপরিচিত, তার পরও আপনারা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। ভালবাসা এবং স্নেহে ভরিয়ে দিয়েছিলেন সকলে। রাজনীতি, ধর্ম, সম্প্রদায়, ভাষা, কিছু বাধা হয়নি। দিনের পর দিন যখন গালি দেওয়া হচ্ছিল আমাকে, আপনাদের নিঃশর্ত ভালবাসা আমাকে আগলে রেখেছিল। আপনারা আমার আশ্রয়, বাড়ি এবং পরিবার হয়ে উঠেছিলেন। আমাকে নিয়ে কোনও দ্বিধা আছে বলে মনে হয়নি'। (Wayanad Lok Sabha Constituency)


রাহুল জানিয়েছেন, ওয়েনাডের মানুষের কাছ থেকে তিনি নিখাদ ভালবাসা, সহমর্মিতা পেয়েছেন। সংসদে ওয়েনাডের কণ্ঠস্বর হতে পারা তাঁর কাছে অত্যন্ত সম্মানের। কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বোন প্রিয়ঙ্কা ওয়েনাডের প্রতিনিধি হচ্ছে জেনে সান্ত্বনাও পাচ্ছেন তিনি। ওয়েনাডবাসী যদি সুযোগ দেন, তাহলে প্রিয়ঙ্কা সেখানকার সাংসদ হিসেবে ভাল কাজ করবেন। রায়বরেলীর পরিবারকে পেয়ে তিনিও সান্ত্বনা পাচ্ছেন, যার সঙ্গে নিবিড় যোগ রয়েছে তাঁর। 



আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পুনরায় ১৫৬৩ জনের NEET-UG পরীক্ষা, এড়ালেন ৪৮ শতাংশ পড়ুয়াই


রাহুল জানিয়েছেন, দুই কেন্দ্রের মানুষের প্রতিই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি। দেশের সর্বত্র যে ঘৃণা, হিংসা ছড়াচ্ছে, তার বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করবেন তাঁরা। ওয়ানাডবাসী তাঁর জন্য যা করেছেন, ধন্যবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। যখন সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল, সেই সময় ওয়েনাডের মানুষ ভালবাসা, নিরাপত্তা দিয়েছেন তাঁকে। ওয়েনাডের মানুষ তাঁর পরিবারের অংশ, প্রত্যেকে চিরকাল তাঁকে পাশে পাবেন।


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অমেঠীতে স্মৃতি ইরানির কাছে পরাজিত হলে, ওয়েনাড রাহুলের মুখরক্ষা করে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ওয়েনাডের পাশাপাশি রায়বরেলী থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। রায়বরেলী বরাবর গাঁধীদের পারিবারিক আসন। সনিয়া গাঁধী সেই আসন ছেড়ে রাজ্যসভায় গিয়েছেন। রায়বরেলীবাসীর হাতে ছেলেকে তুলে দেন তিনি। নির্বাচনের ফল বেরোলে দেখা যায়, ওয়েনাড এবং রায়বরেলী, দুই কেন্দ্রেই বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন রাহুল। 


এই দুই কেন্দ্রের মধ্যে কোনটিকে রাহুল ধরে রাখবেন, কোনটি ছেড়ে দেবেন, সেই নিয়ে চর্চা চলছিল। শেষ পর্যন্ত রাহুল জানান, রায়বরেলী ধরে রাখবেন তিনি, ছাড়বেন ওয়েনাড। ওয়েনাড আসনটিতে বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে প্রার্থী ঘোষণা করেন তিনি। ওয়েনাড থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে অভিষেক ঘটছে প্রিয়ঙ্কার। রাহুল জানিয়েছেন, ওয়েনাড এবং রায়বরেলী, দু'টি আসনকেই গুরুত্ব দেবেন তিনি। প্রিয়ঙ্কাও জানিয়েছেন, দুই কেন্দ্রই তাঁদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।