নয়াদিল্লি : রেলমন্ত্রকের (Railways Ministry) ১০৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার। রেলবোর্ডের চেয়ারপার্সন ও সিইও (Chairperson and CEO of Railway Board) নিয়োগ করা হল জয়া বর্মা সিনহাকে (Jaya Verma Sinha)। গতকাল এই নিয়োগে সিলমোহর দেয় কেন্দ্র। রেলমন্ত্রকের  ১০৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম মহিলা হিসাবে এই দায়িত্ব গ্রহণ করলেন তিনি। বালেশ্বরে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার (Balasore Train Accident) পর রেলের তরফে জনগণের কাছে মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনিই।


এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জয়া বর্মা সিনহা ১৯৮৬ সালে রেলওয়ে ট্র্যাফিক সার্ভিসে যোগ দেন। তার পর থেকে রেলের তিনটি জোনে কাজ করেছেন- উত্তর রেল, দক্ষিণ পূর্ব রেল ও পূর্ব রেলে। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস মেম্বার (অপারেশনস অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) জয়া বর্মা সিনহাকে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।


অনিল কুমার লাহোতির উত্তরসূরি হিসাবে কাজ করবেন তিনি। ১ সেপ্টেম্বর থেকেই তাঁর দায়ভার শুরু। পরের বছর ৩১ অগাস্ট তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এদিকে এবছরই ১ অক্টোবর তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট পদের মেয়াদ শেষ করার জন্য একই দিনে তাঁকে পুনর্নিয়োগ করা হবে।


সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনিই ছিলেন রেলের তরফে জনসাধারণের সঙ্গে সংযোগের মুখ। প্রসঙ্গত, ওড়িশার ওই দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনার পেছনে জটিল সিগন্যাল ব্যবস্থার কথা সংবাদ মাধ্যমের সামনে ব্যাখ্যা করেন জয়া বর্মা সিনহা। এছাড়া বাংলাদেশের ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনের চার বছরের রেল উপদেষ্টা থাকার সময় মৈত্রী এক্সপ্রেসের উদ্বোধনে উল্লেখয়োগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন জয়া বর্মা সিনহা।


প্রসঙ্গত, এই মৈত্রী এক্সপ্রেস ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশের ঢাকাকে সংযুক্ত করেছে। এছাড়া তিনি পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনে রেলওয়ে ম্যানেজার হিসাবেও কাজ করেছেন। রেলের ১৬৬ বছরের ইতিহাসে সিনহার এই নিযুক্তি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ, প্রথম মহিলা হিসাবে এই পদ লাভ করলেন তিনি। ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রেলবোর্ড। তবে, ভারতীয় রেলের বয়স ১১৮ বছর। তার পর থেকে রেলের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করছে এই বোর্ড। সিনহার নিযুক্তি শুধুমাত্র তাঁর ব্যক্তিক্রমী যোগ্যতাকেই তুলে ধরে না, উপরন্তু লিঙ্গ বৈচিত্রের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য।