নয়াদিল্লি: মন্দিরের ভিত নির্মাণে মাটির গর্তের ভিতরে ঢেলে দেওয়া হল প্রায় ১১ হাজার লিটার দুধ ও ঘি, বাজারে যার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ টাকার উপরে। ঘটনাটি রাজস্থানের ঝালওয়ার জেলার রাতলাই এলাকার। এখানে স্থাপিত হতে চলেছে এক বিশাল দেবনারায়ণ মন্দির যার ভূমিপুজো উপলক্ষেই গত শনিবার এই বিশাল পরিমাপের নৈবেদ্যর ব্যবস্থা হয়। জানা গিয়েছে, মোট এক কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী দুই বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে দেবনারায়ণ মন্দির নির্মাণ।
এই বিশাল নৈবেদ্যর মধ্যে ছিল ১৫০০ লিটার দই, প্রায় ১ কুইন্টাল দেশি ঘি আর বাকি পুরোটাই ছিল খাঁটি দুধ যার বাজারমূল্য প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা। মন্দির নির্মাণ কমিটির মুখপাত্র রামলাল গুজ্জর জানান, এই বিপুল পরিমাণ দুধ, দই ও ঘি জোগাড় করেছেন গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছ থেকে। এছাড়া অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও এগিয়ে এসেছেন এই নৈবেদ্য সংগ্রহে।
রামলাল জানিয়েছেন, গুজ্জরদের মন্দির নির্মাণে দুগ্ধজাত পণ্য ব্যবহারের প্রচলন থাকলেও তা বাধ্যতামূলক নয়। তবে অতীতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই প্রথা তাঁরা পালন করেছেন। তাঁর দাবি, ঈশ্বরের থেকে প্রাপ্তির তুলনায় এই খরচের কোনও তুলনাই চলে না। তা ছাড়া, গবাদি পশুপালক গুজ্জররা প্রতিদিনের পুজোয় দেবনারায়ণকে দুধ দিয়ে স্নান করান বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এই বিশাল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্যের এ হেন অপচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গুজ্জর সম্প্রদায়ের কাছে এটা কোনও অপচয় নয়। প্রভু দেবনারায়ণ আমাদের গবাদি পশুর রক্ষাকর্তা। আমাদের যা কিছু উন্নতি তাঁরই কৃপায়। এই কারণেই ভিতপুজোয় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁকে দুগ্ধজাত পণ্য উৎসর্গ করেছি।’
রামলাল যাই-ই বলুন না কেন যে দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ অনাহারে মারা যান, দুধের অভাবে শিশুমৃত্যু ঘটে নিয়মিত, প্রসূতি মা প্রোটিন সঞ্জাত খাবার না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, সেখানে মাটিতে ভিতের গর্তে এমন ভাবে দুধের অপচয় কোনও যুক্তিতেই মেনে নেওয়া যায় না। কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ঘটনাটির প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দাবি তুলেছে ভগবানের উদ্দেশে দুধ যদি দিতেই হয় তবে তা দরিদ্র মানুষের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হোক, তাতেই বরং ভগবান তুষ্ট হবেন!