জয়পুর: গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর বিচার চাইতে গিয়েছিলেন আদালতে। কিন্তু সেখানে চরম অভিজ্ঞতা হলে দলিত সম্প্রদায়ের নির্যাতিতার। কোথায় আঘাত লেগেছে, তা দেখতে চেয়ে স্থানীয় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নির্যাতিতাকে জামা-কাপড় খোলার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে বিচারকের বিরুদ্ধে (Rajasthan Magistrate)। গোটা ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল। মানবাধিকার সংগঠন এবং মহিলা সংগঠনগুলি ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছে।
রাজস্থানের করৌলি থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, দলিত সম্প্রদায়ের মেয়ে ওই নির্যাতিতার বয়স ১৮ বছর। গত ১৯ মার্চ তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। সেই নিয়ে ২৭ মার্চ হিন্ডৌন থানায় অভিযোগ দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষাও পুলিশই করায়। কিন্তু ৩০ মার্চ বয়ান রেকর্ডের জন্য নিয়ে গেলে, ম্যাজিস্ট্রেট মেয়েটিকে জামা-কাপড় খুলতে বলেন। কোথায়, কতটা আঘাত লেগেছে, জানতে চান। (Rajasthan News)
ওই কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছেন, বয়ান রেকর্ড হয়ে যাওয়ার পর আমাকে জামাকাপড় খুলতে বলেন ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি আপত্তি জানান তাতে। মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট হলে আপত্তি থাকত না বলে জানান। তাও নাছোড়বান্দা ছিলেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। শরীরের কোথায় কোথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে দেখাতে হবে বলে জোর করতে থাকেন। অপমানে তিনি মাটিতে মিশে যান বলে জানিয়েছেন ওই কিশোরী।
এর পর আদালত থেকে বেরিয়ে থানায় ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ডেপুটি এসপি (ST-ST) মীনা জানিয়েছেন, ৩০ মার্চই অভিযোগ দায়ের হয়। কোতোয়ালি থানায় শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের হয়েছে অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে আইপিসি ৩৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তফসিলি জাতি এবং উপজাতিদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা প্রতিরোধ আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
ইতিমধ্যেই রাজস্থান হাইকোর্টে বিষয়টি পৌঁছেছে। বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মানবাধিকার সংগঠন এবং মহিলা কমিশনের তরফেও এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। রাজস্থান হাইকোর্টের ভিজিল্যান্স রেজিস্ট্রার অজয় চৌধরি অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাজ করেন। আদালতের অন্য বিচারক এবং আইনজীবীদের বয়ানও শোনেন তিনি।