মুম্বই: কারও কাছে তিনি ছিলেন অভিভাবক, কারও কাছে পথপ্রদর্শক। মতের মিল না হলেও, রতন টাটাকে সম্মান করতেন সকলেই। তাই প্রবীণ শিল্পপতির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দেশে। শিল্পজগৎ থেকে রাজৈতিক মহল, সকলেই রতন টাটার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ। 'বন্ধু' রতন টাটার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানিও। আর সেই আবহেই আম্বানিদের নিয়ে রতন টাটার একটি মন্তব্য নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। (Ratan Tata)
বেশ কয়েক বছর আগের কথা। বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে মুকেশ আম্বানির ১৫০০০ কোটি টাকার বাড়ি নিয়ে জোর চর্চা চারিদিকে। একটি সাক্ষাৎকার চলাকালীন সেই প্রসঙ্গ উঠলে রতন টাটার মতামতও চাওয়া হয়। এতে রতন টাটা যে মন্তব্য করেন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয় সেই সময়। সোজাসাপটা নিজের মতামত জানানোয় প্রশংসিতও হন তিনি। (Mukesh Ambani)
মুম্বইয়ের বুকে 'অ্যান্টিলিয়া' নামের মুকেশ আম্বানির যে ২৭ তলা বাড়ি রয়েছে, তা নিয়েই প্রতিক্রিয়া চাও হয়। জবাবে রতন টাটা বলেন, "বিষয়টি আমাকে ভাবায়। এর জন্যই তো বিপ্লব হয়! যে ব্যক্তি ওখানে থাকেন, চারপাশে কী দেখছেন, কী পাল্টাতে পারেন, তা নিয়ে ভাবা উচিত ওঁর। উনি যদি এ নিয়ে ভাবিত না হন, তা দুঃখজনক। কারণ দেশের এমন মানুষ প্রয়োজন, যাঁরা নিজেদের বিপুল ঐশ্বর্যের কিছুটা অংশ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য বরাদ্দ করবেন। অর্থনৈতিক বৈষম্য ঘোচাতে অতি সামান্য চেষ্টাই করছি আমরা। আসলে বৈষম্য দূর করার কথা বললেও, আমরাই বৈষম্যের রাস্তা করে দিচ্ছি।"
সমাজের সব স্তরের মানুষের উন্নয়নে বিত্তশালীরা যে সেভাবে উদ্যোগী নন, তা জানাতে দ্বিধা করেননি রতন টাটা। সেই সময় তাঁর ওই মন্তব্যের প্রশংসা করেন সাধারণ মানুষজন। পাশাপাশি, বিতর্কও তৈরি হয়। সেই নিয়ে TATA গোষ্ঠীর তরফে পরে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'মুকেশ আম্বানির বাড়ি নিয়ে যে খবর বেরিয়েছে, তা নিয়ে কিছু জিনিস পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত। তথ্যগত ভুল রয়েছে খবরে। বৃহত্তর ক্ষেত্রে সমাজে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য রয়েছে, তা নিয়েই মন্তব্য করেছেন রতন টাটা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই বোধহয় তাঁর মন্তব্য ব্যবহার করে চাঞ্চল্য ছড়ানো হচ্ছে'।
তবে শুধু রতন টাটাই নন, মায়ানগরীতে আম্বানিদের গগনচুম্বী অট্টালিকার সমালোচনা করে সেই সময় বিশিষ্টদের অনেকেই সরব হন। ইতিহাবিদ রামচন্দ্র গুহ, চিত্র পরিচালক প্রকাশ ঝা আম্বানিদের সমালোচনা করেন। অনেকে আবার আম্বানিদের সমর্থনেও এগিয়ে আসেন।