নয়াদিল্লি: ফের রেপো রেট কমাল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ বছরে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে দ্বিতীয়বার। আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, করোনার জেরে সঙ্কটে পড়া অর্থনীতিকে কিছুটা অক্সিজেন দিতে এই উদ্যোগ।


আজ আশাতীতভাবেই ৪০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, স্বল্পমেয়াদি ঋণের হার আগের ৪.৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হল। রিভার্স রেপো রেটও ৪০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে হল ৩.৩৫ শতাংশ। ভিডিও কনফারেন্সে শক্তিকান্ত জানিয়েছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানেটারি পলিসি কমিটি বা এমপিসি আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বজায় রাখার পক্ষে মত দিয়েছে, ৬ সদস্যের ৫ জনই রেপো রেট কমানোর পক্ষপাতী।  এ নিয়ে ৩ দিন বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

এর আগে ২৭ মার্চ সুদের হার ৭৫ বেসিস কমিয়ে দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, ঘোষণা করে, লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের সুবিধার্থে ঋণের সুদ গ্রহণ ৩ মাস স্থগিত রাখা হবে। এছাড়া এপ্রিলে রিভার্স রেপো রেট কমিয়ে ৩.৭৫ শতাংশ করে আরবিআই, যাতে ব্যাঙ্কগুলি নিষ্ক্রিয় তহবিল তৈরি বন্ধ করে, উল্টে ঋণদান বাড়ায়। আরবিআই গভর্নর জানিয়েছেন, কলকারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ, খনিজ তেল, বেসরকারি কেনাকাটা, সব কিছুরই মারাত্মক চাহিদা পড়ে গিয়েছে, ফলে বিরাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি রাজস্ব আদায়। এই পরিস্থিতি থেকে বার হতে আর্থিক, রাজস্ব ও প্রশাসনিকভাবে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যাতে অন্তত ২০২১ অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধ্বে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়।

আরবিআইয়ের আজকের ঘোষণা স্বাগত জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহল। হাউজিং ডট কমের সিইও ধ্রুব আগরওয়ালা এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এর ফলে শুধু গৃহনির্মাতারা নন, ক্রেতারাও উপকৃত হবেন, বিশেষত তাঁরা, যাঁরা লকডাউনের ফলে উপার্জন কমে যাওয়ায় মারাত্মক চাপে রয়েছেন।  ভূমিকা গ্রুপের এমডি উদ্ধব পোদ্দার বলেছেন, তাঁরাও এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছেনস, এভাবে রেপো রেট কমতে থাকলে গত ১০-১৫ বছরের মধ্যে এটাই হবে সর্বনিম্ন সুদের হার। আর ৩ মাসের জন্য সুদ স্থগিত রাখলে লকডাউনে সঙ্কটে পড়া অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবেন। অ্যাসোচ্যাম কর্তা প্রদীপ আগরওয়াল বলেছেন, সুদের হার পড়ে যাওয়ায় মানুষ বাড়ি কিনতে আগ্রহী হবেন বলে তাঁদের আশা। যদি ব্যাঙ্কগুলি এই সুবিধে দেয় তবে লকডাউনের আগে যাঁরা বাড়ি কেনার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সস্তায় গৃহ কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা আরবিআইয়ের সিদ্ধান্তে লাভবান হবেন কারণ এঁরা ঠিক সময়ে ইএমআই মেটানোর ব্যাপারে অত্যন্ত মনযোগী। ইএমআই রেট নজিরবিহীনভাবে কমে যাওয়ায় তাঁরা বাড়ি কিনতে আগ্রহী হবেন, ফলে চাহিদা বাড়বে।  এবার সরকারের উচিত, নির্মাতাদেরও সাহায্যে কিছু ঘোষণা করা, যাতে প্রকল্পগুলি বিনা বাধায় শেষ হতে পারে।