কলকাতা: দিল্লির বিস্ফোরণের ৫ দিন পরে খুলে গেল লালকেল্লা ও লালকেল্লা সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন। রবিবার সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া ছিল লালকেল্লা চত্বর। CISF, র্যাফের সঙ্গে ছিল দিল্লি পুলিশও।
গত সোমবার সন্ধেবেলা ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল দিল্লির লালকেল্লার সামনের এলাকা। চালকের আসনে ছিল বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড উমর-উল-নবি। চোখের নিমেষে পুড়ে ছাই হয়ে যায় একের পর এক গাড়ি। এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দেহাংশ। ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরে লালকেল্লা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। লালকেল্লা সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিস্ফোরণের পর থেকে এলাকা জুড়ে ছিল শুধুই আতঙ্ক আর হাহাকার। শীতের মরশুমে লালকেল্লায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। সোমবারের ঘটনা ওলটপালট করে দিয়েছিল সব কিছু। ৫ দিন বন্ধ থাকার পরে রবিবাসরীয় সকালে পর্যটকদের জন্য ফের খুলে গেল লালকেল্লা। বীভৎস বিস্ফোরণের পরে লালকেল্লা খুললেও কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া ছিল কেল্লার প্রতিটি অংশ। এক পর্যটক বলছেন, 'নিরাপত্তা এখানে খুব জরুরি বিষয়ে, গত সপ্তাহে যা হল তারপরে দিল্লিতে নিরাপত্তা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এখন সব জায়গায় পুলিশ, CISF ভর্তি, আগেও একদিন আসার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বন্ধ ছিল বলে আসতে পারিনি। আজকে আসতে পেরে খুব ভাল লাগছে।'
সকাল থেকে দফায় দফায় স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চালায় CISF। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল র্যাফ ও দিল্লি পুলিশের বিশাল টিম। আরেক পর্যটক বলছেন, 'এটা দেশের রাজধানী, আমরা চাই এখানে নিরাপত্তা আরও জোরদার হোক, যাতে সহজে (অপরাধীদের) ধরা যায়। যেখানে অনেক বেশি লোক আছে সেখানে আরও একটু নিরাপত্তা বাড়ানো হোক। বেশি লোক যেখানে, সেখানে এই রকম হামলার সম্ভাবনা বেশি থাকে।' আরেক পর্যটক বলছেন, 'এই রকম নিরাপত্তা থাকাই বাঞ্চনীয়, কারণ এই সমস্ত জায়গাগুলো এমন জায়গা, যেখানে পর্যটকের প্রচুর ভিড় থাকে, এই রকম জায়গায় যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।' আরেক পর্যটক বলছেন, 'এইসব স্পট আমাদের হেরিটেজ স্পট। হঠাৎ হঠাৎ যদি হামলা হয় আমাদের দুশ্চিন্তা থাকেই।'
অন্যদিকে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় লালকেল্লার এই পার্কিং লটও। এখানে পার্ক করা কোনও গাড়িই এতদিন নিয়ে যাওয়া যায়নি। এই পার্কিং লটেই বেশকিছুক্ষণ ছিল ঘাতক i20 গাড়িটি। রবিবার সকালে এখানে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশের বম্ব ডিটেকশন টিম। বিস্ফোরণের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, 'একটা গাড়ির পিছনে আমার গাড়ি ছিল, ওই বিস্ফোরণের সময় ছিল, আমি কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গেছি, আমার গাড়ি ভেঙেচুরে গেছে। এত তীব্র বিস্ফোরণ হয়েছিল। প্রথমে বুঝতেই পারছিলাম না কীভাবে বিস্ফোরণ হল, আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম আমার এর ভাই সঙ্গে ছিল।'
রবিবার থেকে লালকেল্লার মেট্রো স্টেশনও খুলে দেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতেও পর্যটনকেন্দ্রকেই টার্গেট করেছিল জঙ্গিরা। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল একের পর এক নিরীহ পর্যটককে। এবার লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণ। ফের টার্গেট ছিল সেই পর্যটকরাই? উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।