চারিদিকে থমথমে পরিস্থিতি। সোমবার ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রাজধানী দিল্লি। সোমবার সকালেই ফরিদাবাদে বিপুল মাপের বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। আর এদিনই গুজরাত থেকেও আসে বড় খবর। গত ৭ নভেম্বর সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যোগসূত্র আছে সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় হায়দরাবাদের এক ডাক্তারকে ( Ahmed Mohiyuddin Saiyed )। তার কাছ থেকে চার কেজি ক্যাস্টর-বিন ম্যাশ উদ্ধার করে গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (ATS)। এটিএস সূত্রে খবর, ওই ডাক্তার মারাত্মক বিষ, রিসিন তৈরির জন্য ক্যাস্টর-বিন ম্যাশ সংগ্রহ করেছিলেন। এই বিষ দিয়েই সে হামলা চালাতে চেয়েছিল দিল্লি এবং আহমেদাবাদের জনাকীর্ণ খাবারদাবারের বাজারে। সেই অনুসারে নজরও রাখছিল এই সব জায়গায়। জানা যাচ্ছে, ধৃত সঈদ চিন থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করেছে। এরপর সে আইসিসের আঞ্চলিক শাখা ইসলামিক স্টেট - খোরাসান প্রদেশ (আইএসকেপি) এর সদস্য আবু খাদিমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত।
এই ভয়ঙ্কর বিষাক্ত রিসি ব্যবহার করে জৈব সন্ত্রাস চালানো যায়। সম্ভবত এই ডাক্তারের পরিকল্পনা ছিল সেটাই। রিসিন একটি ভয়ঙ্কর বস্তু! এই রাসায়নিক ব্যবহার করে বহু হাই-প্রোফাইল হত্যা ঘটানোর ইতিহাস পাওয়া যায় অতীত ঘাঁটলে। জৈব সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র হিসেবে এই রিসিন ব্যবহার করা যেতে পারে। অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি রিসিনকে গ্রেড বি জৈবিক অস্ত্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে। সারাবিশ্ব রিসিনকে চেনে একটি রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে।
রিসিন, একটি বিষাক্ত গ্লাইকোপ্রোটিন। স্তন্যপায়ী প্রাণির কোষের সংস্পর্শে এলে কোষের প্রোটিন সংশ্লেষণ বন্ধ করে দেয়, ফলে কোষের মৃত্যু ঘটে।আবার তরল বা গুঁড়ো রিসিন শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। মৃত্যু ঘটাতে পারে।
রিসিন দিয়ে জৈব সন্ত্রাস চালানোর ষড়যন্ত্র করার সন্দেহে গুজরাত থেকে এক ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে সাহায্য করা ও ভারতের একাধিক শহরে রিসিন হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করার সন্দেহে আরও দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের একজন উত্তর প্রদেশের শামলির একজন দর্জি এবং লখিমপুর খেরি থেকে একজন ছাত্র।
পুলিশ জানিয়েছে যে, গত ছয় মাস ধরে দিল্লির আজাদপুর মান্ডি, এশিয়ার বৃহত্তম পাইকারি ফল ও সবজির বাজার, আহমেদাবাদের নারোদা ফলের বাজার এবং লখনউতে আরএসএস অফিসে তল্লাশি চালিয়েছেন ওই চিকিৎসক। ঘন ভিড় এবং জনসমাগমের জন্য বেছে নেওয়া এই স্থানগুলিকে টার্গেট করেছিল ওই ডাক্তার।