নয়াদিল্লি: খুন করা থেকে জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ রাখার অভিযোগ। ৮১ জনের ফাঁসির আদেশ সৌদি আরবে (Saudi Arabia )। সাম্প্রতিক ইতিহাসে গণমৃত্যুদণ্ডে বেনজির সিদ্ধান্ত সৌদি আরবে। যা ১৯৮০ সালের গণ মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যাকেও ছাপিয়ে গেল। ১৯৭৯ মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ দখল এবং জঙ্গি হামলার অভিযোগে ১৯৮০ সালে ৬৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।


আরব কেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য শনিবার বেছে নিল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। রাশিয়ার ইউক্রেনের যুদ্ধের দিকে যখন গোটা বিশ্বের নজর, তখনই এই খবর সামনে আসে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী পেট্রোলের দাম কমানোর আশা করছে ৷ সূত্রের খবর, তেলের দাম নিয়ে আগামী সপ্তাহে সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ।


যদিও করোনাকালে সৌদি আরবে মৃত্যদণ্ডের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বাদশাহ সালমান এবং ক্রাউন প্রিন্স মহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে দেশে দোষীদের শিরশ্ছেদ করার প্রক্রিয়া জারি আছে।  সৌদি প্রেস এজেন্সি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে জানিয়েছে যে সংশ্লিষ্টরা "নিরপরাধ পুরুষ, নারী ও শিশুদের হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।" রাষ্ট্র আরও জানিয়েছে, দোষীদের মধ্যে অনেকেই আলকায়দা, ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সদস্য। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবেশী ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জানা গিয়েছে, যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭৩ জন সৌদি আরবের বাসিন্দা, ৭ জন ইয়েমেনের, একজন সিরিয়ার।


সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, একাধিক জঘন্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বহু সাধারণ নাগরিক এবং আইনবিভাগের সঙ্গে যুক্তদের হত্যা করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থী মতাদর্শের বিরুদ্ধে কঠোর এবং অটল অবস্থান নেবে রাষ্ট্র।  বন্দীদের কীভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তা বলা হয়নি। যদিও সৌদি আরবে সাধারণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের শিরশ্ছেদ করা হয়।


এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে সৌদি আরব। লন্ডনের অ্যাডভোকেসি গ্রুপের রিপ্রিভের ডেপুটি ডিরেক্টর সোরায়া বাউয়েনসের কথায়, "বিশ্বের এখনই জানা উচিত যে মহাম্মদ বিন সালমান যখন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন, তখন রক্তপাত হতে বাধ্য।" সৌদির ইউরোপীয় মানবাধিকার সংস্থা ডিরেক্টর আলি আদুবুসির অভিযোগ, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজনকে নির্যাতন করা হয়েছিল। মৃত্যদণ্ড হল বিচারের বিপরীত। এর আগে ২০১৬ সালে গণ মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হয়। বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগে এক ধর্মগুরু সহ ৪৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডকে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে ৩৭ জন সৌদি নাগরিকের শিরশ্ছেদ করেছিল। যাদের বেশিরভাগই সংখ্যালঘু ছিল। সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত অপরাধের অভিযোগে  মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৯ মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ দখল এবং জঙ্গি হামলার অভিযোগে ১৯৮০ সালে ৬৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: প্রাণ বাঁচাতে মসজিদে আশ্রয় ইউক্রেনীয়দের, সেখানেই বোমা বর্ষণ রাশিয়ার