নয়াদিল্লি: শাহিনবাগের প্রতিবাদী দম্পতির চার মাসের বাচ্চার মৃত্যুর ঘটনায় শিশুদের বিক্ষোভ অবস্থানে সামিল করা নিয়ে কেন্দ্র, দিল্লি সরকারকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের। শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রতিবাদ-অবস্থান চলছে প্রায় দুমাস হতে চলল। সেখানে এক দম্পতি তাঁদের ৪ মাসের বাচ্চাকে নিয়ে ধরনায় বসেছিলেন।
গত ৩০ জানুয়ারি রাতে শাহিনবাগের অবস্থান থেকে তাঁরা বাড়ি ফেরার পর বাচ্চাটি ঘুমের মধ্যে মারা যায়। তাত্ক্ষনিক উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট। তবে তার পিছনে ছিল ১২ বছরের মুম্বইয়ের মেয়ে জেন গুনরতন সাদাভারতে। ২০১৯-এর ইন্ডিয়ান কাউন্সিল পর চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের দেওয়া সাহসিকতার জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়া মেয়েটি শীর্ষ আদালতকে লেখা চিঠিতে বলে, শাহিনবাগের প্রতিবাদের আয়োজকরা, বাচ্চাটির বাবা-মা তার অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ, যার পরিণতিতে তাকে মরতে হয়েছে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে শিশুদের টেনে আনা ‘নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে’ বলে সওয়াল করে সে আবেদন করে, বাচ্চাদের এ ধরনের কর্মসূচিতে নামানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত। ২০১৮ –র আগস্টে মুম্বইয়ের ক্রিস্টাল টাওয়ারে আগুনে আটকে পড়া লোকজনের পুনরুদ্ধার অভিযানে সাহায্য করে সে, ১৭ জনকে নিরাপদে সফল ভাবে বের করে আনায় তার ভূমিকা ছিল।
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ আজ শাহিনবাগের প্রতিবাদী মায়েদের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেছে, মাতৃত্বের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা আছে। শিশুদের নিয়েও গভীর ভাবে বিচলিত আমরা। ওদের অবহেলা করা উচিত নয়।
শাহিনবাগের মায়েদের আইনজীবীরা স্কুলে তাদের বাচ্চাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয় বলে উল্লেখ করেন, বাচ্চাদের ডিটেনশন ক্য়াম্পে আটকে রাখার কথাও তোলেন। এক আইনজীবী বলেন, ওদের বাচ্চারা বাড়ি ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলে, তাদের পাকিস্তানি, সন্ত্রাসবাদী বলে কটাক্ষ শুনতে হয় স্কুলে।
যদিও প্রধানমন্ত্রী এহেন যুক্তি শুনতে অস্বীকার করে এসব এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কহীন বলে জানিয়ে দেন। বলেন, এসব কথা বলার জন্য এই মঞ্চকে ব্যবহার করা যাবে না। এর বিচার এখানে হতে পারে না। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমরা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলার জন্য এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হোক, চাই না। এসব অপ্রাসঙ্গিক যুক্তি দেখানো চলবে না। মামলাটা সিএএ, এনআরসি বা পডুয়াদের পাকিস্তানি বলা নিয়ে নয়।
আজ বেঞ্চ শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের আরও বলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য রাস্তা আটকে অবস্থান চলতে পারে না। ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেছে আদালত।