করুণাময় সিংহ ও অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: মিড ডে মিলে অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে বেধড়ক মার খেতে হল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদককে, ফাটল মাথা (Malda Mid Day Meal Chaos)। অভিযোগের তির প্রধান শিক্ষকের দিকে। কার্যত নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার 'টাল বাঙ্গরুয়া হাই মাদ্রাসা'-য়। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই স্তম্ভিত অভিভাবকেরা, প্রায় সকলেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক এবং ১ জন অশিক্ষক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
যা জানা গেল...
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাই মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষকের নাম খায়রুল আলম। তাঁর বিরুদ্ধে অতীতেও মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প 'কন্যাশ্রী', সবুজ সাথী, রূপশ্রী-সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পে নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে নয়া সংযোজন মিড ডে মিল নিয়ে অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ। স্বয়ং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধ মিড ডে মিল প্রকল্পের চাল চুরির অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে মাদ্রাসা পরিদর্শনে এসেছিলেন নব-নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক এবং কয়েকজন সদস্য। তাঁরা প্রধান শিক্ষককে এই নিয়ে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অভিযোগ, সেই জিজ্ঞাসাবাদের মুখেই প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম ম্যানেজিক কমিটির সম্পাদক, আব্দুল মাতিন ও অন্যান্য সদস্যদের ওপর চড়াও হন। মাদ্রাসার দুই অশিক্ষক কর্মীর সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির ওই তিন সদস্যকে মারধর করেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চাকু দিয়ে, সম্পাদককে কোপানো পর্যন্ত হয় বলে শোনা গিয়েছে। সেই গণ্ডগোলের আওয়াজেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিভাবকরা ছুটে এসেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এর পর প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এলাকার বাসিন্দাদের বচসা বেঁধে যায়। জখম আব্দুল মাতিন এবং ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এবং ভালুকা ফাঁড়ির বিশাল পুলিশ বাহিনী। প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম, গোলাম রব্বানি নামের অশিক্ষক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও গোটা ঘটনায় যিনি মূল অভিযুক্ত, সেই প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, সবটা চক্রান্ত করা হয়েছে। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।
প্রতিক্রিয়া...
তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তা মেনে নেয় তৃণমূল। সুযোগ বুঝে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। তাদের প্রশ্ন, এসব দেখে ছাত্ররা কী শিখবে? 'শিক্ষাঙ্গনেও রক্তের দাগ' খোঁচা তাদের।
আরও পড়ুন:২ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে আগাম জামিন সোহমের