হম তো ঘর সে নিকলে হি থে/বাঁধকর সর পর কফন/জো হথেলী পর লিয়ে লো বড় চলে ইয়ে কদম/জিন্দেগী তো আপনি মেহমান মউত কি মেহফিল মেঁ হ্যায়/সরফরোশি কি তমন্না অব হমারে দিল মেঁ হ্যায়…’


আপন হতে বাহির হওয়ার কথা লিখেছিলেন কবি। বকলমে তা করে দেখিয়েছেন ভারত মায়ের দামাল সন্তানরা (Shaheed Diwas)। নিজ স্বার্থ নয়, দেশের স্বার্থে হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলা পরতে দু'বার ভাবেননি। সেই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণেই শহিদ দিবস পালনের রীতি রয়েছে। ২৩ মার্চ দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয় গোটা দেশে। বৃহস্পতিবারও শহিদ স্মরণের দিন (Shaheed Diwas History)।


২৩ মার্চ দিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়


জাত, ধর্ম, বর্ণের নিরিখে বিভাজন নয়, সকলের জন্য স্বাধীনতা অর্জনই ছিল লক্ষ্য। আপন হতে বাহির হওয়ার তত্ত্বেই বিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা। তাই দেশের জন্য তাই আত্মবলিদান দিতে পিছপা হননি ভগৎ সিংহ, শিবরাম রাজগুরু, সুখদেব থাপর। ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ দেশের এই তিন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ফাঁসিতে ঝোলায় তাঁদের। হাসিমুখে লাহৌর জেলে দেশের জন্য ফাঁসির দড়ি গলায় পরেন। সেই থেকেই ২৩ মার্চ তিনটি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়।


এ দিন শহিদ দিবসে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরুর আত্মবলিদান চিরকাল স্মরণ করবে ভারত। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এঁদের অবদান অতুলনীয়'।



স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে এর আগে 'অমৃত মহোৎসবে'র ঘোষণা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের সেই 'অমৃত মহোৎসবে'র ওয়েবসাইটেও শহিদ দিবসের বার্তা দেওয়া হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আখ্যান উঠে এসেছে তাতে। রয়েছে ভগৎ সিংহ, সুখদেব, রাজগুরুর রুদ্ধশ্বাস অভিযানের ভিডিও ব্যাখ্যাও। 


হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরু। ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা, যা তাঁরা চলে যাওয়ার পরও উদ্বুদ্ধ করে বিপ্লবীদের।


আরও পড়ুন: Indian Railways: রেলযাত্রীদের জন্য বড় সুখবর! কমছে দূরপাল্লার ট্রেনের AC কামরার ভাড়া!


১৯২৮ সালের ৩০ অক্টোবর স্যর জন সাইমনের লাহৌর সফরের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চাসলান লালা লাজপত রাই। ‘সাইমন গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। প্রতিবাদ থামাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। তাতে গুরুতর আহত হন লাল লাজপত রাই।


লালা লাজপত রাইয়ের মৃত্যুর পর ভগৎ সিংহ, সুখদেব এবং রাজগুরু জেমস স্কটকে হত্যার ছক কষেন। কিন্তু চিনতে ভুল করে জেপি সন্ডার্সকে হত্যা করে বসেন তাঁরা। লালা লাজপতের রাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে সেন্টার লেজিস্টেটিভ অ্যাসেম্বলিতে বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেন ভগৎ সিংহ, সুখদেব, রাজগুরুরা।


১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ তাঁদের ফাঁসি কার্যকর হয় ভগৎ সিংহ, সুখদেব, রাজগুরুর


১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল বোমা নিয়ে ঢুকে ধরা পড়ে যান তাঁরা। তাতে ফাঁসির সাজা হয় তাঁদের। ভগৎ সিংহের যখন ২৩ বছর বয়স, সুখদেবের ২৪ এবং রাজগুরুর ২২, ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ তাঁদের ফাঁসি কার্যকর হয়।