মুম্বই: দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফলের দায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা দলের জাতীয় সভাপতি জগত প্রকাশ নড্ডার নয়, বরং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। রাজধানীর ভোটের ফল বেরনোর পরদিন এমনই প্রতিক্রিয়া বিজেপির প্রাক্তন শরিক শিবসেনার। উদ্ধব ঠাকরের দলের মত, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিবালের আমআদমি পার্টির (আপ) বিরাট জয় মোটেই বিস্ময়কর নয়। দিল্লিতে গত পাঁচ বছর ধরে কেজরিবালের আপ সরকারের উন্নয়নের মডেল বরাবর সমর্থন করছে তারা।
দিল্লিতে ৭০টির মধ্যে ৬২টি ঝুলিতে ভরেছে আপ, বিজেপির আসন বাড়লেও আটেই থেমেছে।
শিবসেনার বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির ক্যারিশ্মার জোরে একার হাতে ক্ষমতা দখল করলেও বিজেপি পরপর রাজ্য বিধানসভা ভোটে হারছে কেননা হয় কোনও একটি দল বা নেতা তাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে।
শিবসেনার মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নন, দিল্লির ভোটকে মর্যাদার ইস্যু করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জেপি নড্ডা সম্প্রতি দলের রাশ হাতে নেন, কিন্তু আসল লোক অমিত শাহ। ওরা ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্রে হেরেছে। উনি দলীয় সভাপতি পদের মেয়াদ শেষের আগে একটা ভোট জিততে চেয়েছিলেন। দেশের রাজধানীতে আপের পতাকা উড়ছে, আর দেশের অর্থনৈতিক রাজধানীতে শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী বসেছেন।
অমিত শাহ বিজেপির প্রচারের নেতৃত্বে ছিলেন, একাধিক সভায় ভাষণ দেওয়া ছাড়াও দুয়ারে দুয়ারে, বাড়ি বাড়ি প্রচারেও যান। দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে ফিডব্যাকও নেন।
দিল্লিতে বিজেপির ভরাডুবিকে ‘ঔদ্ধত্য, অহঙ্কার, ইগো’ এবং ‘আমাদের কথাই আইন’-এই মনোভাবের পরাজয় বলেও উল্লেখ করেছে শিবসেনা। কেজরিবালের বিজেপির ‘মেরুকরণের প্রয়াসে’র উল্টো পথে হেঁটে তাঁর দলের উন্নয়নমূলক কাজের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রচারের কৌশলের প্রশংসা করেছে শিবসেনা। ‘মেরুকরণের চেষ্টা’ সফল হয়নি বলে জানিয়েছে তারা। বলেছে, বিজেপি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর মতো ইস্যু প্রচারে তুলে আনতে চেয়েছিল। দিল্লির শাহিনবাগের প্রতিবাদ, আন্দোলনকে শুধুই মুসলিমদের ক্ষোভ বলে দেখানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভোটাররা এহেন ‘মেরুকরণে’র প্রয়াসে সাড়া না দিয়ে কেজরিবালের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
শিবসেনা এও বলেছে, গত বছর লোকসভা নির্বাচনে দিল্লির সাতটি আসনই জিতেছিলে বিজেপি, কিন্তু বিধানসভা ভোটে তারা কেজরিবালের মতো শক্ত স্থানীয় বিকল্প নেতার বাধার মুখে পড়ে, যিনি নিজের কাজের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছেন।