নয়াদিল্লি: কুখ্যাত মানুষ পাচারকারী ও দিল্লির সব থেকে বড় সেক্স র‌্যাকেটের মালকিন সোনু পঞ্জাবনকে ২৪ বছর জেলের সাজা দিল দিল্লির একটি আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১২ বছরের এক বালিকাকে অপহরণ করে তাকে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করে সে। তার সঙ্গী সন্দীপ বেদওয়ালেরও ২০ বছর জেল হয়েছে।

সোনু পঞ্জাবনের আসল নাম গীতা অরোরা। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তার ৬৪,০০০ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। তার হয়ে বেদওয়াল গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর ওই ১২ বছরের মেয়েটিকে অপহরণ করে, তারপর তাকে বারবার বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করা হয়। দেহ ব্যবসায় নামানোর জন্য সোনু পঞ্জাবনও কিনে নেয় তাকে। দ্বারকার অ্যাডিশনাল সেশনস কোর্টের বিচারক প্রীতম সিংহ বলেছেন, সোনুকে কোনওভাবে ক্ষমা করা যায় না, সব সীমা অতিক্রম করেছে সে। নিজে মহিলা হয়ে এমন ভয়ঙ্করভাবে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন সে কীভাবে করাতে পারল। আইন তাকে কঠোরতম সাজা দেবে।

আদালত বলেছে, বেআইনি মানুষ পাচারের অপরাধে সোনুকে প্রথম ১৪ বছর জেলের সাজা দেওয়া হল। এরপর ১০ বছর সে জেল খাটবে অপ্রাপ্তবয়স্ককে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা, দাসবৃত্তি করানো, অপ্রাপ্তবয়স্ককে কেনা ও বিক্রি করা, বিষ দেওয়া, জোর করে বন্দি করে রাখা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের জন্য। বেদওয়ালেরও ৬৫,০০০ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১০ বছরের জেল হয়েছে অপহরণ, নাবালিকাকে বিক্রি করা ও দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা, দাসবৃত্তি করানো এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের জন্য। এছাড়া ওই ১২ বছরের বালিকাকে ধর্ষণের জন্যও ১০ বছরের জেল হয়েছে তার।

আদালত বলেছে, ওই বালিকাকে ৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই ঘটনায় তার শিক্ষাই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নয়, তার শৈশবও নরক করে দিয়েছে অপরাধীরা।

প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, মেয়েটিকে দেহ ব্যবসায় যোগ্যতর করে তুলতে তাকে আলাদা করে ইঞ্জেকশন দিত সোনু পঞ্জাবন। মেয়েটির ঘরে যাদের পাঠাত তাদের কাছ থেকে সে মাথাপিছু নিত ১,৫০০ টাকা। ৫ বছর আগে এই মামলা দায়ের হওয়ার পর মেয়েটি পুলিশে এসে জানায়, বেদওয়াল তাকে প্রেমের কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিল। সীমা আন্টি বলে একজনের বাড়ি নিয়ে আসে বিয়ের কথা বলে, সেখানে তাকে ধর্ষণ করে। তারপর শুরু হয় একের পর এক লোকের কাছে তাকে বিক্রি করা। ৪ বার এভাবে তাকে বিক্রি করা হয়, শেষে আসে সোনু পঞ্জাবনের হাতে। সোনু তাকে দেহ ব্যবসায় নামায়, ৩ জনের কাছে বিক্রি করে দেয়। এদেরই একজন সৎপাল, শেষমেষ বিয়ে করে তাকে।