নয়াদিল্লি: নির্ভয়াকাণ্ডে আজ রবিবার বিশেষ শুনানি হবে দিল্লি হাইকোর্টে।  সাজাপ্রাপ্ত চার অপরাধীর ফাঁসির আবেদন জানিয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালে প্যারা মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় চার অপরাধীর ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ফাঁসির একদিন আগে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে যায়।
গতকাল সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে চার অপরাধীর ফাঁসি চেয়ে আবেদন জানিয়েছে তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্র সরকার। এই প্রেক্ষিতে গতকালই সাজাপ্রাপ্তদের জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিল হাইকোর্ট। আজ রবিবার সেই মামলারই বিশেষ শুনানি।
গতকাল দিল্লি হাইকোর্টে যে আবেদন করেছিল কেন্দ্র ও তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ, তাতে বলা হয়েছিল, সাজাপ্রাপ্তরা এক-এক করে নিজেদের রিভিউ পিটিশন বা কিউরেটিভ পিটিশন বা ক্ষমাপ্রার্থনার আবেদন দাখিল করছে। এ সবই করা হচ্ছে একেবারে শেষ মুহূর্তে, অর্থাৎ মৃত্যু পরোয়ানা জারি হওয়ার পর। এর ফলে, সাজা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। সাজাপ্রাপ্তরা শুধুমাত্র আইন নিয়ে খেলা করে চলেছে। অযথা সাজা দেরি হচ্ছে। এককথায় গোটা বিচারব্যবস্থা প্রহসনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, দোষীরা ইচ্ছাকৃতভাবে নির্ধারিত সময়সীমা পার করার পর তাদের রিভিউ-কিউরেটিভ-ক্ষমাপ্রার্থনা আবেদন করছে। উদ্দেশ্য একটাই-- মৃত্যুদণ্ডকে বিলম্ব করা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দ্বিতীয়বারের জন্য নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি পিছিয়ে দেয় দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর, দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন প্যারামেডিক্যাল ছাত্রী। অপরাধীদের নৃশংসতায় শিউরে ওঠে গোটা দেশ। ১৩ দিন পরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে জীবনযুদ্ধে হার মানেন নির্ভয়া!
ঘটনায় এক নাবালক-সহ গ্রেফতার হয় ৬ জন। তাদের মধ্যে ২০১৩ সালে তিহাড় জেলে আত্মঘাতী হয় অন্যতম অভিযুক্ত ও বাসচালক রাম সিং। বাকি পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে ২০১৩-তে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় নিম্ন আদালত। সেই নির্দেশ বহাল রাখে দিল্লি হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টও একই মত প্রকাশ করে।
এরইমধ্যে ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত নাবালককে তিন বছর পর ছেড়ে দেওয়া হয়। যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে বিনয় শর্মা রাষ্ট্রপতির কাছে  প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েও পরে তা ফিরিয়ে নেয়। মুকেশ ও অক্ষয় ঠাকুরের মৃত্যুদণ্ড রদের আর্জি খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।