হায়দরাবাদ: অগাস্ট থেকেই ভারতে শুরু হবে রুশ ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-র উৎপাদন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ডিবি বেঙ্কটেশ। খুব শীঘ্রই এই টিকা প্রস্তুতির প্রযুক্তি ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে রাশিয়া। এদিন ডিবি বেঙ্কটেশ জানিয়েছেন, 'প্রায় ৮৫ কোটি ডোজ উৎপাদনের কথা ভাবা হচ্ছে।'
মে মাসের শুরুতে প্রথম দফায় ১.৫ লক্ষ স্পুকনিক ভি পেয়েছিল ভারত। এরপরেই ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরিস জানায়, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য হায়দরাবাদে প্রথম দফায় স্পুটনিক ভি টিকাকরণ চালু হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফার ফের ৬০,০০০ ডোজ পৌঁছয় ভারতে। ইতিমধ্যেই দু-দফায় টিকা এসে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ডিবি বেঙ্কটেশ শনিবার আরও জানিয়েছেন, 'মে মাসের শেষে দিকে ভারতকে স্পুটনিক ভি-র ৩০ লক্ষ ডোজ সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি আগামী জুনেই ভারতকে ৫০ লক্ষ ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে রাশিয়ার তরফে।'
তবে আগামী অগাস্ট মাস থেকেই ভারতে স্পুটনিক ভি-র উৎপাদন শুরু হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে। উৎপাদন শুরু হলেই প্রাথমিক ভাবে টিকার ৮৫ কোটি ডোজ তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেঙ্কটেশ।
পর্যাক্রমে ভারতে স্পুকনিক ভি সরবরাহ হবে। এদিন বেঙ্কটেশ জানিয়েছেন, 'ভারতে তিন দফায় রুশ টিকা উৎপাদন হবে। প্রথমে রাশিয়া পুরোপুরি তৈরি ভ্যাকসিন পাঠাবে ভারতে। শেষের দিকে ভারতকে স্পুটনিক ভি-র ৩০ লক্ষ ডোজ সরবরাহ করা হবে। ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে রাশিয়া। যেটা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় যেই ভ্যাকসিন পাঠানো হবে, সেগুলি ব্যবহারের জন্য তৈরিই থাকবে। তবে ভারতকে আলাদা আলাদা শিশিতে ভরে সরবরাহ করতে হবে।' বেঙ্কটেশ জানিয়েছেন, তৃতীয় পর্যায়ে রাশিয়া ভারতের কোম্পানিকে শুধুমাত্র স্পুটনিক ভি টিকা তৈরির প্রযুক্তি পাঠিয়ে দেবে এবং ভারতেই পুরোপুরি টিকা তৈরি হবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে এই টিকা আমদানিতে ছাড়পত্র পেয়েছে। সেন্ট্রাল ড্রাগস ল্যাবরেটরিস আগেই এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডি ল্যাবরেটরির সঙ্গে যৌথ ভাবে এই টিকা তৈরি করবে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই ২ লক্ষের বেশি ডোজ ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে রাশিয়া। তবে ভারতে এখনও সহজলভ্য নয় স্পুটনিক ভি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা উল্লেখ করেছে, ৫ শতাংশ জিএসটি-সহ আপাতত স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের দাম ধার্য হয়েছে ৯৪৮ টাকা। উল্লেখ্য, হু এবং এফডিএ অনুমোদিত অন্যান্য ভ্যাকসিন আমদানিতেও সম্মতি দিয়েছে ভারত। যার ফলে ফাইজার,মর্ডানা, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো সংস্থার বানানো টিকা ভারতের আনার ক্ষেত্রে সমস্যা মিটবে। যে পরিস্থিতিতে দেশে চলতে থাকা ভ্যাকসিন ভোগান্তি মিটবে বলেই আশা করা যায়।
এর আগে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলে কুদাশেভ জানিয়েছিলেন ভারতের জন্য বছরে ৮৫ কোটি টিকা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ময়দানে নামছেন তাঁরা। আগামী দিনে এই উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি। করোনা আবহে দেশে কোভিশিল্ড-কোভ্যাক্সিনের অভাব নিয়ে ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ উঠেছে। এই আকালের মধ্যে রুশ টিকার জোগান কিছুটা হলেও স্বস্তি জাগাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নীতি আয়োগের সদস্য ভিকে পাল বলেন, 'ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়ানো হবে। ভারতের জন্য বার্ষিক ৮৫ কোটি টিকা তৈরির লক্ষ্য রয়েছে। খুব শীঘ্রই স্পুটনিক ভি-র একটি করে টিকা বাজারে মিলবে।'