কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এমনটাই জানাল আবহাওয়া দফতর। ২৩ তারিখ থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ২৫ তারিখ থেকে শুরু হবে বৃষ্টি। ২৬ তারিখ থেকে শুরু হবে ভারী বৃষ্টি। ২৫ তারিখ ৭০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে হাওয়া।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, ২৪ তারিখের আগে নিম্নচাপ চেহারা নেবে সাইক্লোনের। ২৪ তারিখের পর ঝড় চেহারা নেবে সিভিয়ার সাইক্লোনের। যদিও, আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে আমফানের থেকে কম শক্তিশালী হবে ঘূর্ণিঝড়।
আবহাওয়া দফতরের আশঙ্কা, বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে ইয়াসের। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৭ তারিখ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। কাল সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে সোমবার তা পরিণত হতে হবে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে।
তার জেরে সোমবার সন্ধের পর থেকেই ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ৪০-৫০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। মঙ্গলবার সেই ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিমি।
ক্রমশ বাড়তে থাকবে হাওয়ার বেগ। মঙ্গলবার থেকেই দুই রাজ্যের উপকূল এলাকায় শুরু হবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। ধীরে ধীরে বাড়বে বৃষ্টির দাপট।
ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে থাকবে। বুধবার সন্ধেয় উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুই রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়বে ইয়াস। আগাম সতর্কতা হিসেবে ইতিমধ্যেই সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
পাশাপাশি, সমুদ্রে থাকা মৎস্যজীবীদের আগামীকালের মধ্যে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আসার কথা মাথায় রেখে দিঘা মোহনায় সমস্ত নৌকাগুলোকে সরানোর কাজ শুরু হল। সমুদ্র থেকে আজই ফিরতে বলা হয়েছে মত্স্যজীবীদের।
উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দা ও পর্যটকদের সতর্ক করতে প্রশাসনের তরফে মাইকে চলছে প্রচার। তৈরি রাখা হয়েছে এনডিআরএফকে। সেইসঙ্গে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাগরেও একইরকমভাবে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। মাইকে চলছে প্রচার। প্রস্তুত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা পুলিশও। ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে ২০টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল। প্রতিটি দলে থাকছেন ৫ জন সদস্য।
ডিসি কমব্যাটের অধীনে এরা কাজ করবেন। গত বছরের আমফানের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এবার বাড়ানো হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সংখ্যা।
প্রস্তুত রাখা হয়েছে গাছ কাটার অত্যাধুনিক যন্ত্র। যাতে ঝড়ে গাছ ওপড়ালে দ্রুত তা সরিয়ে ফেলা যায়। এছাড়াও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে রিভার ট্রাফিক পুলিশকে।
গঙ্গাবক্ষে বাড়ানো হবে নজরদারি। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে আগামীকাল চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।