ঝিলম করঞ্জাই: করোনার সুনামি আছড়ে পড়েছে দেশে। ভয়াবহ পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গেরও। এদিকে কোভিড রোগীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরোমাইকোসিস। এবার রাজ্যেও থাবা মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের। চিকিত্সকদের দাবি, এই প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এ রাজ্যের বাসিন্দা, পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলার। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি করোনামুক্ত হওয়ার পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দিন পাঁচেক আগে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে বাংলায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত চারজন রোগীর সন্ধান মিললেও তাঁরা কেউই এ শহরের বাসিন্দা ছিলেন না। চিকিত্সকদের দাবি, মৃত এই মহিলা কলকাতারই পার্শ্ববর্তী এলাকাই বাসিন্দা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কলকাতার এক বাসিন্দা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রয়েছেন। যদিও এই মুহুর্তে রাজ্যে মোট কতজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এখনও জানানো হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, মিউকোরমাইকোসিস আসলে ছত্রাকজনিত রোগ। যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে, HIV বা ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত, নিয়মিত স্টেরয়েড নেন বা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকার কারণে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাঁরাই মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়া ঝুঁকিতে রয়েছেন। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হয় অ্যাম্ফোটেরিসিন বি ইনজেকশন। সেই অ্যান্টিবায়োটিক দোকানে অমিল, চিকিত্সকদের দাবি, এই ওষুধ পেতে কার্যত রোগীদের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। এই রোগ ওষুধ ব্যয়বহুল সরকারের কাছে আবেদন অ্যাম্ফোটেরিসিন বি ইনজেকশনের সরবরাহ বজায় রাখতে, এখনও রোগের প্রকোপ বাড়েনি।সরকার ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। সোমবার মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফে এই ইনজেকশন প্রস্তুতকারক সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাজারের হাত ঘুরে নয়, সরাসরি হাসপাতালকে তা দেওয়া জন্য।
অন্যদিকে উদ্বেগ বাড়িয়ে সম্প্রতি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশের ইনডোরের এমওয়াইএইচ হাসপাতালে। সেখানে ১৩ জন রোগী কালো ফাঙ্গাস সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন বলেও জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মধ্যপ্রদেশের ইনডোরের এমওয়াইএইচ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অধ্যক্ষ শ্বেতা ওয়ালিয়া জানিয়েছেন, 'মিউকোরোমাইকোসিস নামেও পরিচিত এই কালো ফাঙ্গাস। সাধারণত ত্বক বা নাক থেকে এই সমস্যা শুরু হলেও এর প্রভাব পড়ে ফুসফুস এবং মস্তিষ্কেও। এখন কোভিডমুক্ত হয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রেই এই রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে।'
দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্র এবং বেঙ্গালুরুতে বেশ কিছু এলাকায় কোভি়ড রোগীদের এই রোগ ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন সময় মতো সঠিক চিকিৎসা না হলে ভয়াবহ আকার নিতে পারে এই রোগ। সম্প্রতি এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্কবার্তা দিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন: কোভিড রোগীদের নয়া আতঙ্ক কালো ফাঙ্গাস, নির্দেশিকায় সতর্কবার্তা কেন্দ্রের