হাওড়া, বর্ধমান, নদিয়া ও উত্তর দিনাজপুর : সপ্তাহান্তে ৪ জেলায় ৪ পথ দুর্ঘটনা। ১২ জনের মৃত্যু। আহত ৪০ জনেরও বেশি।
শনিবার ভোরে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেলারে ধাক্কা মারে পুরী ফেরত পর্যটক বোঝাই বাস। ট্রেলারে থাকা একটি লোহার পাত কাচ ভেঙে ঢুকে যায় বাসের ভিতরে।
ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ, দমকল ও ন্যাশনাল হাইওয়ের অথরিটির প্রতিনিধিরা। চলে আসে দমকল। গ্যাস কাটার দিয়ে দরজা কেটে আহতদের উদ্ধার করা হয়। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আহত বহু। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে ডোমজুড়ের সিদ্ধেশ্বরতলা থেকে বাস ভাড়া করে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফেরার পথে আজ ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেলারে ধাক্কা মারে বাসটি।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঘন কুয়াশা ও বাসচালকের অসতর্কতার জেরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশও নজরদারি করে না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যায়। যদিও, জাতীয় সড়কে নজরদারির অভাব থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার জেরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ডাউন লেনে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসের চালক ও ট্রেলারচালক পলাতক।
এদিন সকালেই, শুক্রবার গভীর রাতে আসানসোলের জামুড়িয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে গাড়ি উল্টে ৩ যুবকের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত ৩ সহযাত্রী। জানা গিয়েছে, জামুড়িয়ার নিঘা থেকে হোটেলে খাওয়াদাওয়া সেরে ফিরছিলেন জামুড়িয়া বাজারের বাসিন্দা ৬ যুবক। রাত পৌনে ১২টা নাগাদ চাঁদা মোড় থেকে শিবডাঙার দিকে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি একটি পুকুরে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। বাকি তিনজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে, নদিয়ার শান্তিপুরে কৃষ্ণনগর-কালনা রুটের একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় প্রভাত সমাদ্দার নামে এক বাইক আরোহীর। আজ সকাল ১১টা নাগাদ ঢালাই মসজিদ এলাকায় কৃষ্ণনগর-কালনা রুটের একটি বাস উল্টোদিক থেকে আসা একটি মোটরবাইককে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম হন বাইকচালক প্রভাত সমাদ্দার। তাঁকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। উত্তেজিত জনতা বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। পরে শান্তিপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘাতক বাসের চালক পলাতক।
আবার, উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ধনতলায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে মোটর বাইকের সঙ্গে লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু তিন বাইক আরোহীর। সূত্রের খবর, মা ও স্ত্রীকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন গুঞ্জরিয়ার বাসিন্দা বছর ২৪-এর মহম্মদ রসিদ। সন্ধে ৬ টা নাগাদ ঘটে দুর্ঘটনাটি। তিনজনের মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে খবর। ঘটনার পর থেকেই পলাতক লরি চালক। তিনজনের দেহ ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।