নদিয়া: মাফিয়া ডন হতে মুম্বই গিয়েছিল সিনেমার ‘সুরিয়া’। সেখানকার দুষ্কৃতীদের সঙ্গে থেকে থেকে সে হয়ে উঠেছিল কুখ্যাত গ্যাংস্টার! রিলের এই কাহিনিই যেন রিয়েলে। বাংলা সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্যাং বানিয়ে ফেলল মাধ্যমিক পাশ করা নদিয়ার এই ছয় কিশোর! তোলাবাজির গ্যাং!
ছবিতে মুম্বইয়ের ব্যবসায়ীদের হুমকি দেখিয়ে তোলা আদায় করত সুরিয়া। বাস্তবেও তেমনই! টাকা চেয়ে হুমকি ফোন, এসএমএস! কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের জালে একাদশ শ্রেণির এই ছয় ছাত্র!
পুলিশ সূত্রে দাবি, সিনেমার সঙ্গে মিলিয়েই এদের গ্যাংয়ের নাম রাখা হয়েছিল ‘সুরিয়া এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট’। গ্যাংয়ের প্রত্যেকের নামও সিনেমার আদলে, সাংকেতিক। লিডার সূর্য। বাকিরা হল ব্ল্যাক, ড্যানি, কেকে, হিরা, দ্বীপ!
কিন্তু কীভাবে সামনে এল এই ‘খুদে গ্যাং’-দের দৌরাত্ম্য?
সম্প্রতি নদিয়ার দেবগ্রামের বিভিন্ন বাসিন্দাদের কাছে টাকা চেয়ে উড়ো ফোন আসছিল! তালিকায় ছিল এলাকার ধনী ব্যক্তিদের নামও। অভিযোগ, বলে দেওয়া জায়গায় টাকা না পাঠালে, অপহরণের হুমকি দেওয়া হত!গৌরব সাহা নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, হুমকি দিত, পরপর এসএমএস করত।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ছয় কিশোরই জানিয়েছে, তারা বাংলা সিনেমা ‘বস’ দেখেই গ্যাং তৈরির পরিকল্পনা করেছিল যাতে মোটরবাইক, আইফোন কেনার শখ মেটানো যায়। ‘সুরিয়া এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট’-এর পাশাপাশি ‘রোজ গ্যাং’-এর নাম করেও তারা হুমকি ফোন করত, এসএমএস পাঠাত।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ছ’জনের মধ্যে কেউ পুলিশের ছেলে, কেউ বা ব্যবসায়ীর ছেলে, কেউ আবার আইনজীবীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে ‘ব্ল্যাক’ নিজের বাবার কাছ থেকেও টাকা আদায়ের ছক কষেছিল! পরিকল্পনা ছিল, বন্ধুরাই তাকে অপহরণ করবে। তারপর বাবার থেকে চাইবে মুক্তিপণ। ব্ল্যাককে অপহরণের সেই ব্লু প্রিন্ট এখন পুলিশ হাতে!
ধৃতদের থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি মোবাইল ফোন ও একটি সিমকার্ড। কাগজপত্র ছাড়াই ওই সব সিম কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।