উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ‘দীর্ঘজীবী’ শ্রমজীবী ক্যান্টিন। করোনা, লকডাউনের ধাক্কায় তখন সব বন্ধ...। কাজ হারিয়ে অনেকের একমুঠো ভাত জোগাড় করার মতো অবস্থা নেই। সেই সময় গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের মুখে অল্প খরচে খাবার তুলে দিতে সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করেছিল শ্রমজীবী ক্যান্টিন। যাদবপুরের বিজয়গড়ে গত বছরের এপ্রিলের শুরু হওয়া এই কমিউনিটি কিচেন। সোমবার যা পা দিল ৫০০ দিনে।


যাদবপুর থেকে শুরু হওয়া শ্রমজীবী ক্যান্টিন এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। করোনার প্রথম ঢেউ, দ্বিতীয় ঢেউয়ে অসংখ্য মানুষের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের মাধ্যমে। এক বছরে সর্ষের তেলের লিটারে বেড়েছে ৫০ টাকা, কিন্তু শ্রমজীবী ক্যান্টিনে খাবারের দাম রয়েছে সেই ২০ টাকাই। ২০০ জনকে দিয়ে শুরু হলেও, এখন প্রতিদিন ৭০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে অনেকে জন্মদিন, অন্নপ্রাশন পালন করছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনের মাধ্যমে। রোজ অন্তত ২০০ জনকে বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছে গরম ভাত, ডাল, তরকারি মাছ। যাদবপুরে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন উপলক্ষে সেখানে যোগ দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তী, বিকাশ ভট্টাচার্যরা।


বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘মানুষের সেবা করা কাজ, সেটা করে যেতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষ আমাদের বুঝতে পারবে।’


এদিন শ্রমজীবী ক্যান্টিনে দেখা যায় বিজেপি-ত্যাগী অভিনেতা অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রূপা ভট্টাচার্যকে। অনিন্দ্য বলেন, ‘পেটের তাগিদে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলাম। বিজেপি না করলে কাজ পেতাম না।’


শ্রমজীবী ক্যান্টিনে দুই বিজেপি ত্যাগী অভিনেতা যাওয়া ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে লেখেন, ‘সিপিএমের মঞ্চে যদি টিকিট না পাওয়া হতাশ বিজেপি জায়গা পায়, তাহলে আমি আজ এই মুহূর্ত থেকে সিপিএমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম। যে একবারের জন্যও সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে জড়িয়েছে, বিশেষত সে যদি সেলিব্রিটি হয়, তার সঙ্গে কোনওদিন এক মঞ্চে আমি থাকব না। সিপিএম ভেবে দেখুক, আমাদের প্রয়োজন না, তাদের।’