রাণাঘাট:  ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাণাঘাটে ধুন্ধুমার। নার্সিংহোম ভাঙচুর। চিকিৎসকের বাড়িতে চড়াও মৃতের আত্মীয়রা।


৬ মাস আগে সুভাষপল্লীর বাসিন্দা গণেশ দাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নমিতা দাস ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হন। চিকিৎসক অশোক মৈত্র তাঁর সিজার করেন এবং ওই গৃহবধূ এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পরিবারের অভিযোগ, সিজারের পর থেকেই পেটের সেলাই-এর অংশ থেকে ফ্লুইড বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে বার বার চিকিৎসক অশোক মৈত্রকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। পরে ওই মহিলার অবস্থার অবনতি হলে আত্মীয়রা তাঁকে প্রথমে রাণাঘাট মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যান।


গতকাল রাতে কল্যাণীর হাসপাতালে নমিতা দাসের মৃত্যু হয়। এর পরই আজ সকালে দেহ নিয়ে ওই নার্সিংহোমের সামনে রোগীর আত্মীয়রা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। অন্যদিকে গতকাল রাতে জরায়ুর সমস্যা নিয়ে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়া হাবিবপুরের বাসিন্দা অনিতা পালের মৃত্যু হয়। নমিতা দাসের আত্মীয়দের সঙ্গে অনিতা দাসের পরিবারের সদস্যরা মিলিত হয়ে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালায়। পরে তাঁরা নার্সিংহোম সংলগ্ন রবীন্দ্র সরণীর বাসিন্দা চিকিৎসক অশোক মৈত্রের বাড়িতেও চড়াও হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স।


গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এক চিকিৎসক। আরেক চিকিৎসকের বাড়িতে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এদিকে দুই রোগীর মৃত্যু নিয়ে আজব সাফাই দিয়েছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ! একজনের ক্ষেত্রে নার্সিংহোমের মালিক অঞ্জনা কুণ্ডুর দাবি, রোগীর পরিবারের দোষ। অন্যটির ক্ষেত্রে বলেন, ওর বাড়ির লোক তাহলে কেন এখানে চিকিৎসা করাতে আসে?
প্রশ্ন উঠছে, চিকিৎসা সংক্রান্ত কারও কোনও অভিযোগ থাকতেই পারে। তা জানানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও রয়েছে। তাহলে কেন বারবার ভাঙচুরের পথ বেছে নিচ্ছেন রোগীর পরিজনরা?
ঘটনার পর নার্সিংহোম এবং দুই চিকিৎসকদের বাড়িতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত রোগীদের পরিবার।


রানাঘাটে নার্সিংহোমে ভাঙচুর, ভুল চিকিৎসায় দুজনের মৃত্যুর অভিযোগ, দুটি দেহ নিয়ে আত্মীয়দের বিক্ষোভ