কলকাতা: সশস্ত্র বাম আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নকশালবাড়ি থেকে পশ্চিমবঙ্গ সফর শুরু করছেন অমিত শাহ। সেখানে বুথ চলো কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তিনি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বামেদের ভোট বিজেপির দিকে যাওয়া আটকাতে তৎপর, তখন বিজেপিও তৃণমূলের পাশাপাশি বামেদের ভোটব্যাঙ্ক দখলের লক্ষ্যে কোমর বাঁধছে। এই নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে অমিত শাহের সফরসূচি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি জানিয়েছে, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁর পশ্চিমবঙ্গ সফর শুরু করছেন নকশালবাড়ি দিয়ে। সেই নকশালবাড়ি, যা আজও সশস্ত্র বাম আন্দোলনের আঁতুড়ঘরের প্রতীক। ২৫ তারিখ শিলিগুড়িতে নামবেন অমিত। প্রথমেই তিনি যাবেন নকশালবাড়িতে। যেখানে বুথ চলো কর্মসূচি রয়েছে।

১৯৬৭-র ২৪ মে উত্তরবঙ্গের অখ্যাত জনপদ নকশালবাড়িতে কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন পুলিশ ইনসপেক্টর সোনাম ওয়াংদি। কৃষকদের দাবি ছিল, এ তল্লাটে ভূমিসংস্কার হয়নি। ভূমিহীন কৃষকদের হাতে জমি দিতে হবে। এরপরই শুরু হয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের লড়াই।

পরদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১১জন।

১৯৬৭-র ৫ জুলাই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে প্রকাশিত হয় ঐতিহাসিক নিবন্ধ: ‘স্প্রিং থান্ডার ওভার দ্য ইন্ডিয়ান স্কাই’। ভারতের আকাশে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ! তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায় ও উপমুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর যুক্তফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হয় প্রতিবাদ মিছিল। সিপিএম নেতারা নকশালবাড়ি আন্দোলনকে ‘হঠকারী’ আখ্যা দেন। শুরু হয় সিপিএমে ভাঙন। চারু মজুমদার, কানু সান্যালদের নেতৃত্বে তৈরি হয় সিপিআইএমএল। সেই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের ভিত্তিভূমি থেকেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর সফর শুরু করাটা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত পর্যবেক্ষকদের!

গতবছরের বিধানসভা ভোটের পর থেকে এরাজ্যে যতগুলি উপনির্বাচন হয়েছে সবক’টিতেই ভোটের হার বাড়িয়েছে বিজেপি।

এবার তাদের লক্ষ্য, তৃণমূলের পাশাপাশি বামেদের ভোটব্যাঙ্কে পুরোপুরি ধস নামানো। তাই অমিত শাহ শুরুটা করছেন ঐতিহাসিক নকশালবাড়ি থেকে। তারপরের গন্তব্য ভবানীপুর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র!