গোপাল চট্টোপাধ্যায়, রামপুরহাট: আগামী বিধানসভা ভোটে দলের সাফল্য কামনায় তারাপীঠের মন্দিরে পুজো দিলেন অনুব্রত মণ্ডল। একই প্রার্থনা করে জেলার ফুল্লরা মন্দিরে পুজো দিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে এই পুজো নিয়েও পরস্পরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল ও বিজেপি।

এর আগে কালীপুজোর সময় ৩০০ ভরি সোনায় মাকে সাজিয়ে ২২০ আসনের প্রার্থনা করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। সেই সময় তিনি বলেন, ‘মায়ের কাছে চেয়েছি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস যাতে ২২০টি আসন পায়। বীরভূমে তৃণমূল এগারো শূন্য যাতে হয়। সেই প্রার্থনা করেছি।’

এরপর আজ তারাপীঠে পুজো দেন অনুব্রত। এবার তাঁর প্রার্থনা, বিধানসভা ভোটে ২২০ থেকে ২৩০ আসন যেন পায় তৃণমূল কংগ্রেস। পুজো দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘২২০ থেকে ২৩০ আসনের জন্য প্রার্থনা জানালাম তারা মাকে। দল থেকে অনেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তবে মনে রাখতে হবে, কর্মীরা নেতা তৈরি করেন। নেতারা কর্মী তৈরি করেন না।’

বিধানসভা ভোটের বাকি এখনও কয়েক মাস। কিন্তু এখন থেকেই বাংলায় ভোটের উত্তাপ এতটাই, যে মন্দিরে পুজো দেওয়া নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

এদিন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বীরভূমে গিয়ে লাভপুরের ফুল্লরা মন্দিরে পুজো দেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে দলের সাফল্য চেয়েই তিনি পুজো দেন। কটাক্ষ করেন অনুব্রতকে। লকেট বলেন, ‘উনি যতই তারাপীঠে পুজো দিন, ওঁর পাপের বোঝা পূর্ণ হয়েছে। শাস্তি ওঁকে পেতেই হবে।’ পাল্টা অনুব্রতর কটাক্ষ, ‘ওরা যতই পুজো করুক, ওরা ঠাকুরের আশীর্বাদ পাবে না।’

অন্যদিকে, বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করে বসতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘সুব্রত বক্সীকে ফোন করে বলছে, আপনার সঙ্গে একটু বসব। অনুব্রত বলছে দিল্লির নেতা ফোন করে বসতে চাইছে। ন্যূনতম সৌজন্যটুকুও নেই।’ এদিন অবশ্য সে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান অনুব্রত। তাঁর বক্তব্য, ‘দিদি জানেন, দিদি বলবেন।’ পাল্টা লকেট বলেছেন, ‘কে ফোন করেছে জানি না। ওঁর মতো ডাকাত, মস্তান, গুন্ডাদের আমাদের দলে কোনওদিন ঠাঁই হবে না।’ সবমিলিয়ে শাসক-বিরোধী তুঙ্গে তরজা।

সম্প্রতি বিজেপি রাজ্ওয সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে অনুব্রত বলেন, ‘ওর মতো ভাইরাস গোটা রাজ্যে নেই।’ এই কটাক্ষের জবাব দিয়ে দিলীপ বলেন, ‘সম্প্রতি ওঁর আওয়াজ একটু কমেছে। শীঘ্রই স্পিকারের কানেকশন কেটে যাবে।’

২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার ১১টি আসনে ৯টি ছিল তৃণমূলের দখলে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেও জেলার দু’টি আসনই যায় তাদের দখলে। যদিও লোকসভা ভোটে বিধানসভা ওয়ারি ফলাফলে তৃণমূল যেখানে ৬টি আসনে এগিয়ে, সেখানে বিজেপি এগিয়ে ৫টি আসনে। দুই শিবিরের দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বৈরথে সরগরম বীরভূম। আগামী বছরে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সকলের বাড়তি নজর থাকবে রাজ্য রাজনীতির।