বর্ধমান: আউশগ্রাম থানায় তাণ্ডবের পরপরই, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল সিপিএম নেতাকে!
সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, তিনি যে বরদাস্ত করবেন না, ইতিমধ্যে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত পরশুদিনেই তিনি বলেছিলেন, একটা ঘটনা হল, দু’টো গাড়ি জ্বালিয়ে দিল। সরকার কিন্তু কঠোর। আমাদের টাকা নেই। একটা গাড়ি জ্বালিয়ে দিলেন। টাকা কোথা থেকে আসবে।
শুধু কঠোর অবস্থান নেওয়াই নয়, আউশগ্রামকাণ্ডে তা করেও দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী! পালন করলেন রাজধর্ম। তাঁর সবুজ সঙ্কেতেই শনিবার রাতে গুসকরার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল কাউন্সিলর চঞ্চল গড়াইকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রবিবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ধৃত তৃণমূল নেতা চঞ্চল গড়াই। বলেন, দল করি বলতে লজ্জা হচ্ছে, আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। পাল্টা জবাব দিয়েছেন আউশগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আউশগ্রামে থানা জ্বালানোর খবর পাওয়া মাত্রই, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে বার্তা দেন, এ ধরনের ঘটনা কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না। রাজনৈতিক রং না দেখে, থানায় তাণ্ডবে জড়িত বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
গ্রাফিক্স আউট
সেইমতো আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার গ্রেফতার করা হয় সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা বর্ধমান জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সুরেন হেমব্রমকে। পুলিশ সূত্রে দাবি, থানা ভাঙচুর থেকে পুলিশকে মারধর, গোটাটাই পরিকল্পিত।
নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক করে হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেন ধৃত তৃণমূল ও সিপিএম নেতা। পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশকে কোণঠাসা করাই ছিল তাঁদের অন্যতম উদ্দেশ্যে, যাতে বোঝানো যায়, এলাকায় তাঁদের প্রভাব রয়েছে।
আর এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য, পরিকল্পনা মাফিক স্কুলের জমিতে বেআইনি নির্মাণটিকে ইস্যু করে অভিযুক্তরা। থানায় হামলা চালাতে ইন্ধন জোগানো হয় সাধারণ মানুষকে।
যদিও, ধৃত সিপিএম নেতার স্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, তাঁর স্বামী ঘটনার সময় ছিলেন না। বলেন, কালকে ও এখানে ছিলই না। দুর্গাপুরে ছিল। রাতে ওকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে, ও জড়িত নয়। অবরোধ তুলতে সহযোগিতা করেছিল।
ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মীকে গুরুতর আঘাত, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিন বর্ধমান আদালতে তোলা হলে, তৃণমূল নেতা চঞ্চল গড়াই-সহ ৩ জনকে ২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক। বাকি আট জনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত হয়েছে। তাদের ১০ ফেব্রুয়ারি ফের আদালতে তোলা হবে। সিপিএম জোনাল সম্পাদককে আদালতে পেশ করা হবে সোমবার।