শান্তনু নস্কর, বাসন্তী: কেমিক্যাল মেশালেই নাকি দ্বিগুন হচ্ছে টাকা। এমন লোভ দেখিয়েই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। আর সেই ফাঁদেই সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রতারকরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। পর্দাফাঁস হলই। নগদ চার লক্ষ টাকা-সহ পুলিশের জালে ধরা পড়ল দুই ব্যক্তি। ঘটনাটি গোসাবার।
পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে বাসন্তী ও কাছাকাছি এলাকায় একটি প্রতারণা চক্র কাজ করছিল। টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার অছিলায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল তাঁরা। গত শুক্রবার এমনই একটি অভিযোগ দায়ের হয় বাসন্তী থানায়। গোসাবার বাসিন্দা অসিত হালদার নামে এক ব্যক্তি ওই প্রতারণা চক্রের শিকার হন। তিনিই এসে লিখিত অভিযোগ জানান।
ঠিক কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে, অসিত হালদার জানিয়েছেন, তাঁকে ব্ল্যাক ম্যাজিক ও কেমিক্যাল- এর সাহায্যে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার লোভ দেখায় তিন জন ব্যক্তি। লোভে পরে উক্ত ব্যক্তিদের নির্দেশে জ্যোতিষপুর এলাকার এক বাড়িতে ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে পৌঁছে যান তিনি।
দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই পাশের ঘরে বিশেষ একটি কেমিক্যাল গুলে রেখেছিল। অসিতবাবু পৌঁছতেই তাঁর টাকা রেখে একটি ঘরে রেখে অন্য ঘরে তাঁকে কেমিক্যাল আনতে পাঠায় দুষ্কৃতীরা। টাকা দ্বিগুন করার লোভে তিনিও চলে যান কেমিক্যাল আনতে। এই সুযোগে আসল টাকা বের করে ব্যাগে কাগজের বান্ডিল ঢুকিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। অসিতবাবু অন্য ঘর থেকে ফিরলে তাঁকে কেমিক্যালের পাত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয় দুষ্কৃতীরা। পাশাপাশি ১ দিন পর ব্যাগ খুলে দেখারও নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে। প্রতারকদের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন এবং টাকা দ্বিগুন করার লোভে বাড়ি ফিরে যান ব্যক্তি।
১ দিন পর ব্যাগ খুলতেই সব স্পষ্ট হয়ে যায়। ব্যাগে টাকার বদলে কাগজের বান্ডিল দেখে কার্যত আঁতকে ওঠেন অসিত হালদার। তখনই বাসন্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ পেতেই দ্রুত পদক্ষেপ করে বাসন্তি থানার পুলিশ। এরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জ্যোতিষপুর থেকে বাবলু ওরফে মহাদেব মণ্ডল ও বাসন্তী থেকে দেবু কর্মকার নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত দুই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
তা ছাড়া বেশ কিছু টাকার মতো করে কাটা কাগজের টুকরো, কিছু কেমিক্যালের কৌটো, ও কিছু পাত্র উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তৃতীয় ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশের আশ্বাস, খুব শীঘ্রই উক্ত তৃতীয় ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করে বাকি টাকাও উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এরা ছাড়াও এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।