কলকাতা: তমলুকে জয়ের ব্যবধান দ্বিগুণ।কোচবিহারে প্রায় চার গুণ!

আর মন্তেশ্বরে তো ৭০৬ ভোট থেকে জয়ের ব্যবধান পৌঁছে গেল একেবারে ১ লক্ষ ২৭ হাজারে! ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মন্তেশ্বরে ৭০৬ ভোটে জিতেছিল তৃণমূল। একদা বাম দুর্গে ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বাজিমাত করেছেন তৃণমূল প্রার্থী সৈকত পাঁজা। তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩১৬। ২০ হাজার ১৮৯ ভোট পেয়েছে সিপিএম। বিজেপি পেয়েছে ১৬ হাজার ৭৩টি ভোট। কংগ্রেসের ঝুলিতে ২ হাজার ৮৮৫টি ভোট। মোট বৈধ ভোটের ৬ ভাগের একভাগও না পাওয়ায় জামানত জব্দ হয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির।

শুধু মন্তেশ্বরই নয় উপ-নির্বাচনের রাজ্যের তিনটি আসনেই ব্যাপকভাবে জয়ের মার্জিন বাড়াল তৃণমূল!

কোচবিহার লোকসভার মধ্যে মাত্র পাঁচটি পুরসভা রয়েছে। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে রয়েছে দুটি।

মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকার মধ্যে কোনও পুরসভা নেই। অর্থাত, এবারের উপনির্বাচন হয়েছে বিস্তীর্ণ গ্রামীণ এলাকাজুড়ে।আর সেখানেই ফের সবুজ-সুনামি!

এই বিপুল জয়ের নেপথ্যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিই মূল কারণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। কারণ, দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর, উন্নয়নকেই পাখির চোখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের মতো নানা সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে জোর দিয়েছেন তিনি। উপনির্বাচনের ফলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।

তৃণমূলও মনে করছে, এই জয়ের অন্যতম কারণ গ্রাম বাংলার ব্যাপক-উন্নয়ন।

উন্নয়ন তো রয়েইছে। পাশাপাশি, উপ নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান চমকে দেওয়ার মতো হওয়ার নেপথ্যে অন্য কারণও দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন,

নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনতার বিদ্রোহের প্রতিফলন এই ফল।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কেন্দ্রেও প্রচারে না গেলেও, তৃণমূল বারবার নোট বাতিলকেই ইস্যু করছে...কার্যত মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের উপর গণভোট চেয়েছে।

যদিও, বিজেপি মানতে নারাজ যে নোট বাতিলের বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দিয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, নোট বাতিলের ফলে বিজেপির ভোট তিনগুণ বেড়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন দিল্লিমুখী। মোদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করেছেন। আর এই প্রেক্ষাপটেই উপনির্বাচনের এই ফল। যা আগামী দিনে কি মমতা-মোদী লড়াইটা আরও তীব্র করবে?