পূর্ব মেদিনীপুর: অধিকারী গড় কাঁথিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় বদলে হল ‘শুভেন্দু বাবুর সহায়তা কেন্দ্র’। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সহায়তা কেন্দ্রের নতুন রং হল গেরুয়া।


রাতারাতি এই রং বদলকে ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। এই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কণিষ্ক পণ্ডা বলেন, ত্যাগের প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে গেরুয়া রংকে। তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর সৌজন্যে আজ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খোলা হল সহায়তা কেন্দ্র।


এই নিয়ে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি বলেন, দলীয় নির্দেশ মেনে আমরা কর্মসূচি করছি। কে বা কারা পার্টি অফিসের রং বদল করছে খোঁজ নিয়ে দেখব।


অন্যদিকে, গতকাল বঙ্গধ্বনি যাত্রা ঘিরে হলদিয়ায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত পুর প্রধানের বক্তৃতা চলাকালীন দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভ।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে শুক্রবার থেকে সূচনা হয়েছে নতুন কর্মসূচি ‘বঙ্গধ্বনি’-র। হলদিয়ায় সেই কর্মসূচির প্রচারে সুতাহাটা থেকে মঞ্জুশ্রী মোড় পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলের পর মঞ্জুশ্রী মোড়ে দলীয় সভায় বেরিয়ে পড়ে দ্বন্দ্বের ছবি।


দুর্নীতির অভিযোগে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুরপ্রধান শ্যামল আদক। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুধাংশু মণ্ডল, সহ সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, যুব সভাপতি আসগর আলি সহ অন্যান্য নেতার।


হলদিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল শ্যামল আদক শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ। তাই সাধারণ কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।


গতকাল বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচি উপলক্ষ্যে হলদিয়া শহরে মিছিল করে তৃণমূল। মিছিল শেষে সভায় বক্তব্য রাখেন হলদিয়া পুরসভার পুরপ্রধান শ্যামল আদক। জেলা রাজনীতিতে শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত ওই নেতাকে মঞ্চে দেখে আপত্তি জানান তৃণমূল কর্মীদের একাংশ।


সম্প্রতি পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রীর বৈঠক করেন শ্যামল আদক। গতকাল দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ওই নেতা। পুরপ্রধানের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


এ নিয়ে ক্যামেরার সামনে কোনও মন্তব্য করতে রাজি না হলেও পুরপ্রধানের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁকে হেনস্থা করার জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়। বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন তিনি।


ঘটনাকে ঘিরে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসে একের পর এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হচ্ছে। এরা নিজেরাই গণ্ডগোল করে শেষ হয়ে যাবে। মানুষ সব বুঝতে পারছে। ২০২১-এ বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।


শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছে রাজ্য-রাজনীতিতে। তার মধ্যে তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত পুরপ্রধানকে হেনস্থার ঘটনা তৃণমূল শিবিরের অস্বস্তি বাড়াবে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।