কলকাতা: ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির কারণে তেনুঘাট জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। জলাধারের জল এখনও বিপদসীমার ওপরে। তাই পরিস্থিতি সামলাতে আরও জল ছাড়তে বাধ্য হবে কর্তৃপক্ষ। জানিয়ে দিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।
ফুঁসছে দামোদর। দু’পারের গ্রামগুলিতে জারি হয়েছে সতর্কতা! বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। পূর্ব বর্ধমানের গলসি, জামালপুর, রায়না, বাঁকুড়ার সোনামুখী, হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতা-র বহু গ্রাম এখন জলমগ্ন।
জলের তলায় চাষের জমি। হারিয়ে গেছে ঘর। সহায় সম্বলহীন হাজার হাজার মানুষের ঠাঁই হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। এই প্রেক্ষাপটে ডিভিসির পক্ষ থেকে বিপদবার্তা, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির কারণে তেনুঘাট জলাধার থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। জলাধারের জল এখনও বিপদসীমার ওপরে। তাই পরিস্থিতি সামলাতে আরও জল ছাড়তে বাধ্য হবে কর্তৃপক্ষ।
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন সূত্রে খবর, গত ৩ দিনে মাইথন ও পাঞ্চেৎ -- দু’টি জলাধার থেকে মোট ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। শুধু বুধবার সারাদিনেই ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আপার ক্যাচমেন্টের জল।
কী এই আপার ক্যাচমেন্ট? পশ্চিম বর্ধমানে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় সেই জল বিভিন্ন ক্যানেল ও খালের মাধ্যমে দামোদরে গিয়ে মেশে। এটিই আপার ক্যাচমেন্টের জল। এর সঙ্গে এছাড়া মাইথন-পাঞ্চেৎ থেকে ছাড়া জল গিয়ে জমা হয় দুর্গাপুর ব্যারেজে। গত ৩ দিনে সেই জলই ছাড়া হয়েছে ব্যারেজ থেকে। যার পরিমাণ ২ লক্ষ ৫ হাজার ৬৫০ কিউসেক।
আর ডিভিসির এই বার্তাতেই প্রমাদ গুণছেন বন্যা দুর্গতরা। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। বলেন, ডিভিসির বিভিন্ন ব্যারাজ থেকে জল যা ছাড়া হয়েছে, তাতে এরাজ্যের আরও ২-৩টি জেলা ডুবে যাবে। প্লাবিত হবে হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর, বীরভূমের বিস্তীর্ণ অংশ। দীর্ঘদিন ব্যারাজগুলোয় ড্রেজিং হয় না। পলি পড়ে ভর্তি হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে ডিভিসির সংস্কার করতে হবে।
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন আগেভাগে ব্যবস্থা নিলে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত বলে দাবি করেছেন সেচমন্ত্রী। বলেন, বৃষ্টি কমলেও, ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে ও ডিভিসির ছাড়া জলের জন্যেই বঙ্গে দুর্ভোগ। পরিস্থিতি ২০০৯-এর রেকর্ডকেও ছাপিয়ে যাবে।
এই প্রেক্ষিতে বন্যা পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করাটাই রাজ্য সরকারের একমাত্র চ্যালেঞ্জ।