কলকাতা: তৃণমূলের মোকাবিলায় ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সমঝোতা করেছিল বাম-কংগ্রেস। কিন্তু ধাক্কা খায় তাদের সেই স্বপ্ন। বছর খানেক পরে, রাজ্যের সাত পুরসভার ভোটেও ফের ধাক্কা!
সাত পুরসভার ভোটে কোথাও ঘোষিত সমঝোতা ছিল, কোথাও আবার অলিখিত জোট। কিন্তু সব জায়গাতেই বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হল কংগ্রেস-সিপিএমকে।
হলদিয়া পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে দু’দলের আসন সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু একটিও আসন পায়নি বাম কিংবা কংগ্রেস। যদিও, ২০১৬-য় যখন রাজ্যজুড়ে মমতা ঝড়, তখনও এই হলদিয়াতেই ২১ হাজার ৪৯৩ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন সিপিএম প্রার্থী তাপসী মণ্ডল!
কিন্তু, দু’বছর কাটার আগেই সেই সিপিএম বিধায়কই এবার পুর নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দেখা গেল ৮ নম্বর ওয়ার্ডে, কাউন্সিলর পদে লড়া সিপিএম বিধায়কের ঝুলিতে এসেছে মাত্র ১০৮টি ভোট!
সিপিএম দাবি করছে, ভোটই তো হয়নি, তাহলে আর ফল কীসের! উদাহরণ হিসাবে একাধিক ওয়ার্ডের ফলকে অস্বাভাবিক হিসাবে খাড়া করছে তারা। যেমন, হলদিয়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল একাই পেয়েছে ৪ হাজার ৮৯১ ভোট। অথচ বিরোধীদের মিলিত প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৩২! সিপিএম বলছে, এটা প্রতীকি প্রহসন মাত্র! আর তৃণমূল দাবি করছে, এটাই জনাদেশ। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, ওরা সন্ত্রাসের অভিযোগ করেই গেল, মানুষ গুরুত্ব দেয়নি।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হলদিয়ার মতো দুর্গাপুরেও জোটের জয়জয়কার হয়েছিল। দুর্গাপুর পুর এলাকায় দুটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। গত নির্বাচনে দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভায় জয়ী হয় সিপিএম এবং দুর্গাপুর পশ্চিমে কংগ্রেস। কিন্তু, এই অভাবনীয় সাফল্যের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দুর্গাপুরে মুখ থুবড়ে পড়ল জোটের জয়রথ!
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে, দুর্গাপুর পুরসভার ৪০টি ওয়ার্ডে এগিয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। কিন্তু, সেই বাম কিংবা কংগ্রেস এবার পুরভোটে একটি আসনেও জিততে পারল না।
উল্টোদিকে এক বছর আগে তিনটি আসনে এগিয়ে থাকা তৃণমূল এবার দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩টি আসনই জিতে নিল! পাঁশকুড়া পুরসভাতেও খাতা খুলতে ব্যর্থ জোট। সেখানেও তৃণমূলের জয়জয়কার। বীরভূমের নলহাটি পুরসভাতেও এবার ঘোষিত জোট ছিল। সেখানে মাত্র একটি ওয়ার্ডে জিতে কিছুটা মুখরক্ষা করেছেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী।
অর্থাৎ, সাত পুরসভার ভোটে সার্বিকভাবে ফের একবার মুখ থুবড়ে পড়ল বাম-কংগ্রেস।