ভাঙড়:  একদিকে ভাঙড়ে রুট মার্চ করল পুলিশ। অন্যদিকে মিছিলে পা মেলাল গ্রামবাসীরা। দু’দিক থেকেই এল একে অপরকে সহযোগিতার বার্তা। খুলল আলোচনার দরজা। যে আলোচনার পথ ধরে শুক্রবার অবরোধ-মুক্ত হল ভাঙড়।
শুক্রবার সকালেই ভাঙড় থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সিপিআইএমএল রেডস্টারের নেতা অলীক চক্রবর্তী। তবে তাঁরা যে আন্দোলনের রাস্তা থেকে পাকাপাকিভাবে সরে আসছেন না, তা-ও এদিন পরিষ্কার করে দেন বিক্ষোভকারীরা।
সিপিআই(এমএল) রেডস্টার নেতা অলীক চক্রবর্তী বলেন, অনেকদিন রাস্তা বন্ধ থাকার ফলে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। তবে অবরোধ উঠলেও আন্দোলন জারি থাকছে। ৩০ তারিখ মহামিছিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সদস্য শেখ আজিম বলেন, সামনে মাধ্যমিক। অবরোধের ফলে চাষিদের অসুবিধা হচ্ছে। তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, বহিরাগতরা এসে তুললে আবার অবরোধ করা হবে।
ঘোষণার পরই গ্রামবাসীরা মিছিল বার করেন। হাতে হাতে সরিয়ে দেন অবরোধ। রাস্তা দিয়ে শুরু হয়ে যায় যান চলাচল। কিন্তু, শুক্রবার সকালেও পরিস্থিতি এরকম ছিল না। এদিন সকালে হাড়োয়া রোডে ১৮টি জায়গায় চলছিল অবরোধ। পাওয়ার গ্রিডের সামনের এলাকা ছিল কার্যত জনশূন্য।
শেষমেশ অগ্নিগর্ভ এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা দেখায় আলোচনা। সূত্রের খবর, ভাঙড়বাসীও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় একটা রফাসূত্র চাইছিল। কিন্তু, উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বৃহস্পতিবার যেভাবে অনুগামীদের নিয়ে গ্রামে ঢুকে অবরোধ তুলে দেন, সেটা তাঁরা ভালভাবে নেননি।
এরপরই পরিস্থিতি নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে রাজ্যের মন্ত্রী তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এক প্রতিনিধি ভাঙড়ে যান। সূত্রের খবর, ওই প্রতিনিধি গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেন যে, সব্যসাচী দত্ত আর গ্রামে ঢুকবেন না।
এরপরই বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তোলার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা পরিষ্কার করে দেন, পুলিশে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। পুলিশও বার্তা দেয়, তারা গ্রামবাসীদের পাশেই আছে।
দীর্ঘদিন অবরোধ-বিক্ষোভে জেরবার ভাঙড় এখন চায়, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই ছবিটাই আপাতত বজায় থাক। ভাঙড় আবার ফিরুক তার স্বাভাবিক ছন্দে। আলোচনার দরজা খোলা থাকলে, যা করতে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়।