গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: ডেলিভারি বয়ের সঙ্গে বাড়ির মালকিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আর তা ফাঁস হতেই হঠাৎ নিখোঁজ ডেলিভারি বয়! কয়েক দিন পর ভিন রাজ্যের পাথরখাদান থেকে উদ্ধার হয় ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ।


প্রথমে মনে হয়েছিল দুর্ঘটনা। উঁচু থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু। কিন্তু পরে পুলিশ জানিয়ে দেয়, দুর্ঘটনা নয়, মাথার পিছনে তিনটি গুলি করা হয়েছে রামপুরহাটের বাসিন্দা জাকির হুসেনকে।


ডেলিভারি বয় অন্তর্ধান রহস্য এভাবেই বদলে গেছে হত্যা রহস্যে। প্রাথমিক তদন্তে গোয়েন্দাদের অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের টানাপোড়েনে খুন হয়েছেন জাকির হুসেন।


বীরভূমের রামপুরহাট শহরের বাসিন্দা জাকির হুসেন (৩২)। পেশায় ছিলেন একটি ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি বয়। পরিবারের দাবি, গত ২২ জানুয়ারি কাজে বেরিয়ে নিখোঁজ হন জাকির।


রামপুরহাট থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। ২৮ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডের একটি পাথরখাদান থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।


পুলিশ জানিয়েছে, ওই ই-কমার্স সংস্থার অ্যাপে অর্ডারের সূত্র ধরে ২৯ জানুয়ারি পাইকর থানার চাতরা গ্রাম থেকে সৌভিক দত্ত নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।


পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় সৌভিক জাকিরকে খুনের কথা স্বীকার করে ২ মূল অভিযুক্তর নাম জানান। সৌভিক জানিয়েছেন, দুই মূল অভিযুক্তের একজনের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জাকির।


তাই তাঁকে সরিয়ে ফেলার ছক কষা হয়। এলাকায় একমাত্র জাকিরই ওই ই-কমার্স সংস্থার ডেলিভারি করতেন। তাই সেই সংস্থার অ্যাপের মাধ্যমে দু’টি মোবাইল ফোন অর্ডার করা হয়।


পুলিশ জানতে পেরেছে, ২২ জানুয়ারি অর্ডার ডেলিভারির জন্য পাইকর যান জাকির। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সৌভিক জানিয়েছেন, তখনই তিনজনে মিলে তাঁকে অপহরণ করেন।


পুলিশ সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের পাথরখাদানে নিয়ে গিয়ে জাকিরের মাথার পিছনে পরপর ৩টি গুলি করা হয়। খুনকে দুর্ঘটনার চেহারা দিতে তাঁকে খাদানের ওপর থেকে নীচে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়।


হত্যার পিছনে কি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।