সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: সাতদিনের মধ্যে শান্তিপুর ছাড়তে হবে। নইলে নিজের খুনের দায় নিজেকেই নিতে হবে। শান্তিপুরের তৃণমূলত্যাগী বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে খুনের হুমকি দিয়ে দেওয়াল লিখন তাঁরই নির্বাচনী এলাকায়। ঘটনার পিছনে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র রয়েছে। অভিযোগ অরিন্দম ভট্টাচার্যের। সম্পূর্ণ মিথ্যে। পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল। পোস্টারে লেখা, ‘আগামী ৭ দিনের মধ্যে অরিন্দম ভট্টাচার্য তুমি শান্তিপুর ছাড়ো, না হলে তোমার খুনের দায় তুমি নিজে ৷’


শুক্রবার সকালে এ ধরনের দেওয়াল লিখন চোখে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় শান্তিপুরে। শান্তিপুর পুরসভার বাগদেবীপুর ও করমচাপুর এলাকায় এই দেওয়াল লিখনে নিশানা করা হয়েছে, কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে তৃণমূলে এবং সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যকে! স্থানীয় সূত্রে খবর, খুনের হুমকি দিয়ে এই সমস্ত দেওয়াল লিখন হয়েছে রাতের অন্ধকারে। দেওয়ালে সাদা রং করে করে, তার ওপর নীল রং দিয়ে লিখে দেওয়া হয় হুমকি বার্তা। এলাকা ছাড়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে সাতদিন।



দেওয়ালে এমনটাই লেখা হয়

২০ জানুয়ারি, দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে, তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য। দল বদলের পর শান্তিপুরের বিধায়ককে প্রায় বুকে টেনে নেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি অরিন্দম ভট্টাচার্যের খাসতালুকেই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে। শান্তিপুর পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডে দেওয়া ওই পোস্টারগুলিতে লেখা হয় ---‘পাপটা বিদেয় হয়েছে ৷ তৃণমূল কংগ্রেস জিতেই গেছে ৷ বাকি শুধু আবির খেলা ৷ অরিন্দম শান্তিপুর ছেড়ে পালা।’


কোনও পোস্টারে আবার লেখা ছিল ---‘দমবন্ধ করা শান্তিপুর আজ অভিশাপ মুক্ত!’ পোস্টার আক্রমণের তিনদিনের মাথায় এবার খুনের হুমকি দিয়ে দেওয়াল লিখন। এই ঘটনায় তৃণমূলকে দায়ী করেছেন সদ্য দলত্যাগী অরিন্দম। এব্যাপারে অরিন্দম ভট্টাচার্য নিজে জানান, ‘‘এর আগেও আমার নামে পোস্টার পড়েছে। এবার খুনের হুমকি দেওয়া হল। যাঁরা এই চ্যালেঞ্জ দিলেন, তাঁদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। আমি শান্তিপুর ছেড়ে কোথাও যাব না। শাসকদলের তরফ থেকে এই ঘৃণ্য কাজ করা হয়েছে ৷’’


সদ্য তৃণমূলত্যাগী নেতার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অজয় দে-র মতে ‘‘এই রকম ঘৃণ্য কাজ তৃণমূল করে না। তিনি যে অভিযোগ করছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবে জড়িত নয় ৷’’ শুক্রবার বেলার দিকে খুনের হুমকি দেওয়া দেওয়াল লিখন মুছে দেয় পুলিশ।