নয়াদিল্লি: কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে। এই জল্পনার মধ্যেই দিল্লিতে ফের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে বঙ্গ বিজেপি।


দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল এদিন নয়াদিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে। বাংলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে বেশ কয়েক দফা দাবি পেশ করলেন এরাজ্যের বিজেপি নেতারা। কমিশনের কাছে তাঁরা কী বলেছেন, সেই প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।


সেখানে বঙ্গ বিজেপি তাদের দাবিতে মূল তিনটে বিষয় নিয়ে দাবি তোলে। এক- কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। দুই - পক্ষপাতদুষ্ট সরকারি অফিসারদের ভোট প্রক্রিয়ার বাইরে রাখতে হবে। এবং তিন - আগের থেকে বেশি দফায় ভোট করাতে হবে। তাতে বেশি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে।


এদিন দিলীপ বলেন, প্রত্যেকবার তৃণমূল ভোট প্রভাবিত করে। কিছু সরকারি আধিকারিক প্রশাসনের হয়ে কাজ করেন। তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেই লোকগুলিকে প্রথম থেকেই আলাদা করতে হবে। যাতে নির্বাচন প্রভাবিত না হয়।


কমিশনের কাছে বেশি পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি পেশ করেন দিলীপরা। তিনি বলেন, যথেষ্ট পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার দাবি পেশ করা হয়েছে। যাতে প্রত্যেক বুথে বাহিনী থাকে। মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন।


সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কমিশনের কাছে আরও বেশি দফায় ভোট করানোর আর্জি জানান দিলীপ। বলেন, যত সম্ভব বেশি দফায় নির্বাচন করা হোক। প্রত্যেক বুথে বাহিনী হোক। বাহিনী মোতায়েনে সুবিধা হতে বেশি দফায় ভোটগ্রহণ।


কোভিড গাইডলাইন শিথিল করার কথাও বলা হয়েছে বলে জানান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। বলেন, দেশে যখন করোনা চরম পর্যায়ে ছিল, তখনও বিহারে নির্বাচন হয়েছে। সুষ্ঠুভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন করেছে কমিশন। ঐতিহাসিক ব্যাপার ছিল সেটা।


তিনি যোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার দাবি করছে, প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে কোভিড। ফলে, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যেতেই পারে। মানুষ যাতে নিজের মতো এসে ভোট করতে পারে। সে কারণে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের অনুকূল পরিবেশ তৈরি যাতে হয়, সেই আর্জি জানানো হয়েছে।


নির্বাচন কমিশন নদিয়ায় প্রথম পরিবর্তন যাত্রার অনুমতি দিলেও, বাকি চারটির অনুমতি দেয়নি। এপ্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, কমিশন লিখিত অনুমতি দিয়েছে কি না, জানি না। তবে, না দিয়ে থাকলেও আমরা কমিশনকে জানিয়েছি। ফলে রথযাত্রা হবে। আমাদের অধিকার আছে, নির্বাচনের আদে মানুষের কাছে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য রাখার।


তিনি যোগ করেন, এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি। এটা সরকার আটকে দিলে সাধারণ মানুষ জবাব দেবে, আমরাও প্রতিবাদ করব।


মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, আত্মনির্ভর ভারতের সঙ্গে আত্মনির্ভর পশ্চিমবঙ্গ তৈরি করতে চাই। কেউ যদি চাই না বললে সিপিএমের যে দুর্গতি হয়েছে, এদেরও তাই হবে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ঠিক করবে, কী চাই আর কী চাই না। উনি প্রত্যেকবার জোর করে মানুষের ওপর নিজেত মত ও নিজের কাজ চাপিয়ে দিচ্ছিলেন। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ তাঁর দল ছেড়ে চলে আসছে। মানুষ তো চাইবেই।


শেষে কটাক্ষের সুরে দিলীপ ষোষ বলেন,'আগামী নির্বাচন তৃণমূল থেকে মুক্তি নির্বাচন।'