কলকাতা: গরু পাচারকাণ্ডে বসিরহাটের ব্যবসায়ী বারিক বিশ্বাসের বয়ানে সন্তুষ্ট নয় সিবিআই। খবর পাওয়া গিয়েছে, ১২ ফেব্রুয়ারি ফের তলব করা হয়েছে এই ব্যবসায়ীকে। গতকাল সিবিআই দফতরে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বারিক বিশ্বাসকে। সিবিআইয়ের দাবি, এনামুল হকের হয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পুলিশের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতেন বারিক বিশ্বাস।

সম্প্রতি বারিক বিশ্বাসের বসিরহাটের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, বারিক বিশ্বাস বহু প্রশ্নের সদুত্তর দেননি। ওই ব্যবসায়ী তথ্য গোপন করছেন বলে সিবিআই দাবি করেছে। সেই কারণেই ১২ ফেব্রুয়ারি ফের তাঁকে তলব করেছে তারা।

এদিকে সিবিআই তদন্তের মাঝেই চলছে কয়লা পাচার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল যৌথ অভিযান চালায় পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানা ও নিয়ামত ফাঁড়ির পুলিশ। লছিপুর এলাকা থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৫০ টন কয়লা। ওই কয়লা কীভাবে এল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে নামল সিআইডি-ও। ৩৩টি মামলার মধ্যে ৩টিতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। বারাবনি, অণ্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বর খনিতে গিয়ে সিআইডি আধিকারিকরা খনিতে নিযুক্ত ইসিএল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
তবে কয়লা পাচারকাণ্ডে ব্যবসায়ী অনুপ মাঝি ওরফে লালার খোঁজ এখনও পায়নি সিবিআই। গতকাল সিবিআইয়ের এফআইআর খারিজের জন্য লালার আবেদন খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রেলের এলাকায় সিবিআই তদন্ত চালাতে পারবে। তবে রাজ্যের এলাকায় তল্লাশির ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে রাজ্যের। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, লালার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআরে তারা হস্তক্ষেপ করবে না।

কয়লা পাচারকাণ্ডে লালার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। তবে একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েও তাঁর হদিশ মেলেনি। গোয়েন্দাদের দাবি, তলব করা সত্ত্বেও তিনি হাজিরা দেননি সিবিআই দফতরে। এই পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের এফআইআর খারিজের দাবি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন লালার আইনজীবীরা।

কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দিয়েছে, সিবিআইয়ের এফআইআরে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। অর্থাৎ ওই এফআইআর বহাল থাকবে। যেহেতু কয়লা রেলে পরিবহণ করা হয় তাই, ১৯৮৯ সালের রেলওয়ে আইনে রেলের আওতাধীন এলাকা সম্পর্কে যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে, সেই এলাকায় সিবিআই তদন্ত চালাতে পারবে। রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় সিবিআই অফিসার পাঠিয়ে তল্লাশি অভিযান চালাতে বা তদন্ত করতে পারবে না। কিন্তু রাজ্যের এলাকায় সিবিআই সমন পাঠাতে পারবে ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।