কলকাতা: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এবার বিদ্বজ্জনদের নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি একটি ভিডিওয়, এই আইনের বিরোধিতায় সরব হন বাংলার বিদ্বজ্জনরা। সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা ওই ভিডিওতে সব্যসাচী চক্রবর্তী থেকে সুমন মুখোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় থেকে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, কঙ্কনা সেনশর্মার মতো বিশিষ্টদের সিএএ-এর বিরোধিতায় সরব হতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায় তাঁরা সবাই বলছেন— ‘কাগজ দেখাব না’।
বুধবার সেই ভিডিও নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি ওই বিশিষ্টদের ‘নির্বোধ’ বলেও মন্তব্য করেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, এভাবে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে, ধরা পড়ে যাবে।
পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিদ্বজ্জনরা। ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, কোনও দায়িত্ববান নেতার ভাষা এমন আশালীন হওয়া উচিত নয়। তিনি আরও বলেছেন, দিলীপ ঘোষের মতো ব্যক্তির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়ে তিনি সময়ের অপব্যবহার করতে রাজি নন।
পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার মুখেও নিজের 'কুকুরের মতো গুলি করে মারা' সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে অবস্থানে অনড় রাজ্য বিজেপি সভাপতি। উল্টে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএমের বিরুদ্ধেই পাল্টা সুর চড়িয়েছেন তিনি। বলেছেন,আমি বলেছি রাষ্ট্রের স্বার্থে, আগামী দিনেও বলব।
মঙ্গলবার বাংলাকে দেশদ্রোহীদের গড় বলে বিতর্কে জড়ান রাজ্য বিজেপির সভাপতি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি মঙ্গলবার খড়্গপুরে বলেন, ‘‘যেখানে বন্দে মাতরম্, জয় হিন্দের স্লোগান উঠেছে, সেখানে যদি কেউ পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে, তা হলে ভাবতেই হবে এটা দেশদ্রোহীদের গড় হয়ে গিয়েছে। এই দেশদ্রোহীদের আখড়া থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে। বাংলাই দেশ তথা দুনিয়াকে রাস্তা দেখাবে। বাংলাকে দেশদ্রোহী-মুক্ত এবং দেশপ্রেমিকদের এক করার চেষ্টা করছি আমরা।”
তার আগে রবিবার তাঁর মুখে শোনা যায় গুলি চালানোর হুমকি। যারা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করছে, তাদের অসম, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশের মতো গুলি করে মারা উচিত। এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তাঁরা তা-ই করবেন।
এই হুমকির প্রেক্ষিতে আইনি পথে হেঁটেছে রাজ্যের শাসকদল।
ইতিমধ্যেই নদিয়ার রানাঘাট এবং উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়াতে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে তৃণমূল।
বুধবারও গাইঘাটা থানায় দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, মানসিক চিকিত্সক দরকার, বাংলার মানুষকে অপমান করছে, ওদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব করাচ্ছে, মদত আসছে, বাংলা অশান্ত করার চেষ্টা।
পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি সিপিএম,কংগ্রেসকেও নিশানা করেছেন।তিনি বলেছেন, 'সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে বহু নকশাল খুন হয়েছিল। তাঁর অনুগামীরাই এখন মন্ত্রী, নেতা। তাঁর অনুগামীরাই এখন আমাকে জ্ঞান দিচ্ছেন। পাহাড়ে পুলিশের গুলিতে ১১ গোর্খার মৃত্যু হয়েছে।‘তখন কোথায় ছিল অহিংসার কথা?‘কম্যুনিস্টরা ৬ ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীকে মেরেছিল। আমি যা বলেছি, তা ভেবেচিন্তেই বলেছি।দেশের সম্পত্তি ধ্বংস করলে, যা করার করা উচিত'।
এই মন্তব্য সম্পর্কে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, সিদ্ধার্থশঙ্করের অনুগামী হতে পেরে তিনি গর্বিত। একইসঙ্গে বলেছেন, বিজেপি হিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
বাম পরিষদীয় দলনেতা বলেছেন, দিলীপবাবু বস্তাপচা বুলি আওড়াচ্ছেন। ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা নেই, বাস্তবও বোঝেন না। গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস নেই। ফ্যাসিস্টসুলভ মন্তব্য করছেন। হিংসার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন।
সিপিএমের যুব সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার জুড়ে রাজ্যের সমস্ত থানায় তাঁরা এফআইআর করবেন দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। এফআইআর-এর বয়ান হবে একই।
গ্রাফিক্স আউট -
পাল্টা সরব হয়েছেন দিলীপ ঘোষও। তিনি বলেছেন, 'এই যারা জ্ঞান দিচ্ছে, তাদের সরকার কত গুলি চালিয়েছে... এখন ভদ্রলোক সাজছে... মরিচঝাঁপিতে মেরেছেন... কত বেহায়া হলে জ্ঞান দিতে পারে... আমি ধিক্কার জানাই'।
সব মিলিয়ে দিলীপ ঘোষের হুমকি-হুঁশিয়ারি এবং তা নিয়ে প্রতিপক্ষ দলের আক্রমণে রাজ্য রাজনীতির পারদ তুঙ্গে।
‘নির্বোধ’, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করায় দিলীপের নিশানায় বিশিষ্টরা
ABP Ananda web desk
Updated at:
15 Jan 2020 09:02 PM (IST)
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে এবার বিদ্বজ্জনদের নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি একটি ভিডিওয়, এই আইনের বিরোধিতায় সরব হন বাংলার বিদ্বজ্জনরা। সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা ওই ভিডিওতে সব্যসাচী চক্রবর্তী থেকে সুমন মুখোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় থেকে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, কঙ্কনা সেনশর্মার মতো বিশিষ্টদের সিএএ-এর বিরোধিতায় সরব হতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায় তাঁরা সবাই বলছেন— ‘কাগজ দেখাব না’।
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -