কলকাতা: মিছিলে হামলার অভিযোগ এনে রাজ্যজুড়ে থানায় থানায় বিক্ষোভ বিজেপির। বেহালায় মঞ্চ খুলে দিল পুলিশ। গণেশ টকিজ থেকে পাল্টা ধিক্কার মিছিল তৃণমূলের।
স্বামীজির জন্মদিনে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল কলকাতার একাধিক জায়গা। হামলার অভিযোগ তুলে ২৪ ঘণ্টার রাজ্যজুড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচি নিল বিজেপি।


চেয়ার-টেবিল, গাড়ি ভাঙচুর থেকে লাঠালাঠি, খণ্ডযুদ্ধ, রক্তপাত...শুক্রবার সব কিছুরই সাক্ষী হয় কলকাতা। তার রেশ আছড়ে পড়ল শনিবারও। লেকটাউন, বাগুইআটি, বেহালা-সহ একাধিক থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। পাল্টা গণেশ টকিজ থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত মিছিল করে তৃণমূল। নেতৃত্ব দেন শশী পাঁজা, স্মিতা বক্সি। এদিন বৈশাখী থেকে করুণাময়ী পর্যন্ত জনসংযোগ যাত্রা করে তৃণমূল। হাজির ছিলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী, সুজিত বসু। বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, বিজেপি যে রাজনীতি চালাচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে নেত্রীর নির্দেশে এই কর্মসূচি।



কলকাতার পাশাপাশি তৃণমূল-বিজেপি সংঘাতের আবহে ফুটছে একাধিক জেলা। পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে পুলিশের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসানসোল বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত মিশ্র বলেন, এই নীতি নিয়ে থাকলে আইসিকে তুলে ফেলে দেব।
মিছিল করে বহরমপুর থানায় ঢুকতে গেলে বিজেপিকে বাধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি হয়।
এদিন পুরুলিয়া, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, বাঁকুড়া-সহ বিভিন্ন জেলার একাধিক থানায় বিক্ষোভ-অবস্থান করে বিজেপি। অনুমতি না থাকার অভিযোগে বিজেপির মঞ্চ খুলে দেয় বেহালা থানা।
সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। নানা ইস্যুতে সম্মুখসমরে তৃণমূল-বিজেপি। এই আবহে নয়া মাত্রা যোগ করেছে বিজেপির যুব সংগঠনের ‘প্রতিরোধ সঙ্কল্প অভিযান’।
বিজেপি দাবি করছে, পায়ের তলা থেকে জমি সরছে বুঝে হামলার পথ নিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। মুকুল রায় বলেন, ঠিকঠাক ভোট হলে হেরে যাবে। সেই আতঙ্ক থেকে লাগাতার আক্রমণ করছে তৃণমূল।
যদিও গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচিকে তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির লোক কোথায় যে থানা ঘেরাও করবে। যেখানে মিডিয়া সেখানে যাচ্ছে। লোক কোথায়?

শুক্রবারের অশান্তির ঘটনায় ধৃত ৯ জনকে এদিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হয়। তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। ধৃত ৫ জনের পুলিশ হেফাজত এবং ৪ জনের জেল হেফাজত হয়েছে।

শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, সোমবার থেকে ফের জনতা যুব মোর্চার মিছিল করতে পারবে। তদারকিতে থাকবেন স্পেশাল অফিসারের সঙ্গে থাকবেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। এর প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতৃত্ব জানায় পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও বিজেপি সূত্রে খবর, আদালতের নির্দিষ্ট করে দেওয়া দিন থেকেই কর্মসূচি পালন করা হবে।