রানা দাস ও কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: হালিশহরে বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় উত্তাল উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর। থানায় বিজেপির বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার। এই প্রেক্ষিতেই এবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ। ২ দিন নিখোঁজ থাকার পর পুকুর থেকে উদ্ধার মৃতদেহ। প্রতিবাদে আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ বিজেপির।


মৃতের নাম শুকদেব প্রামাণিক। বয়স ২৭। স্থানীয় সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোলে জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার পূর্বস্থলীর চাঁদপাড়ায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। সেই মিছিলের দায়িত্বে ছিলেন শুকদেব। অভিযোগ, মিছিলের পরই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। এদিন দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহ। বিজেপির অভিযোগ, খুনের নেপথ্যে তৃণমূল। যদিও খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পূর্বস্থলী ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ও প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।

এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিকেলে আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। বেশ কিছুক্ষণ পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। মৃতের বাড়িতে যান বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের চোখের নীচে একটি ক্ষতচিহ্ন হয়েছে। সেই ক্ষত কী করে হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এলে স্পষ্ট হবে মৃত্যুর কারণ। এখনও পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

অন্যদিকে, ভোটের আগে উত্তপ্ত বর্ধমান শহর। বিজেপি কার্যালয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা শাসকদলের পার্টি অফিস ভাঙচুরে নাম জড়াল বিজেপির। অভিযোগ, শনিবার রাতে শালবাগান এলাকায় বিজেপির কার্যালয় পুড়িয়ে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। প্রতিবাদে রবিবার সকালে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা।

পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি যুব মোর্চা জেলা সভাপতি শুভম নিয়োগীর দাবি, ‘তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে। সেই কারণে রাতের অন্ধকারে এই কাজ।’

পাল্টা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদারের দাবি, ‘বিজেপি নিজেরা এই ঘটনা ঘটিয়ে তৃণমূলের নামে চালাচ্ছে।’

অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি, বেচারহাটে তাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করে বিজেপি। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা ও বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বর্ধমান পুর এলাকা। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনটি তৃণমূলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। বিধানসভাওয়াড়ি ফলে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও, কমেছে ভোটের ব্যবধান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভা ভোটের আগে জেলায় বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ।