দার্জিলিংপাহাড়ের অচলাবস্থা এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই দার্জিলিংয়ে শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে গেল। ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে প্রশাসন।
শুক্রবার মাঝরাতে রাজ্য যখন ঘুমিয়ে, তখন ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল দার্জিলিঙের প্রাণকেন্দ্র।

বিস্ফোরণ ঘটে রাত বারোটা নাগাদ। পাহাড়ের মানুষরা ভেবেছিলেন হয়তো ভূমিকম্প হয়েছে! কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তাঁদের ভূল ভাঙে! জানা যায়, মোটর স্ট্যান্ডের এই রাস্তায় বিস্ফোরণ হয়েছে! পুলিশ সূত্রে দাবি, বিস্ফোরণের তীব্রতা ও প্রভাব ৪০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। বিস্ফোরণের পর চকবাজারের রাস্তায় বড় গর্ত হয়ে যায়। ফুটো হয়ে যায় শাটার, ভেঙে খানখান হয় জানলার কাচ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। রাতেই শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। কিন্তু কাউকেই পাওয়া যায়নি! সূত্রের খবর, বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে, ১৬ মিলিমিটারের ছোট ছোট রডের টুকরো ও বিয়ারিং! এগুলিকেই আইইডির মধ্যে সপ্লিন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, আতঙ্ক ছড়াতেই এই বিস্ফোরণ। পুলিশ কড়া হাতে মোকাবিলা করবে। ১ মাস আগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জিলেটিন স্টিক চুরি, এখানের সঙ্গে যোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের খবর পেয়ে তদন্তকারী দল নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং গিয়েছেন সিআইডি স্পেশাল সুপার নর্থ, অজয় প্রসাদ। সঙ্গে রয়েছে বম্ব স্কোয়াডও। পাহাড়ের বিস্ফোরণ নিয়ে এদিন বিকেলে নবান্নে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি সিআইডি, এডিজি আইনশৃঙ্খলা এবং এডিজি আইবি। শনিবার সকালে সেনাবাহিনীরও একটি দল বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আইইডি ব্যবহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। কিন্তু কীসের মধ্যে বিস্ফোরক ছিল, সেটা কি আকৃতির, তা এখনও স্পষ্ট নয়! তবে পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণস্থল সংলগ্ন এলাকায় একটি তার পাওয়া গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মাওবাদীদের কায়দায়, তারের সাহায্যে দূর থেকে চকবাজারে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল?

পুলিশ সূত্রে খবর, ফোনে আড়ি পেতে গোয়েন্দারা গত ১৫ দিন ধরে পাহাড়ে মাওবাদী নেতা আকাশের নেতৃত্বে একটি স্কোয়াডের উপস্থিতির কথা জানতে পেরেছেন!
দার্জিলিং বিস্ফোরণে মাওবাদী যোগ? বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে লুঠ হওয়া জিলেটিন স্টিককে বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শুক্রবারই অসমের গুয়াহাটি স্টেশন থেকে ১০ কেজি আরডিএক্স উদ্ধার হয়েছে। আর এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দার্জিলিঙে বিস্ফোরণ!

তাহলে কি দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে?