হাওড়া: অমানবিক হাওড়া! লরির ধাক্কায় জখম হয়ে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে রইলেন এক সাইকেল আরোহী। দেখলেন সবাই, কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে গেলেন না কেউ। যখন হাসপাতালে নিয়ে গেল পুলিশ, ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেক।


দিল্লির পর এবার হাওড়া। ফের চরম অমানবিকতার নজির। দুর্ঘটনার পর রাস্তায় পড়ে থেকে মৃত্যু হল এক সাইকেল আরোহীর। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন সবাই! মৃতের নাম ধীরেন নায়েক। বছর ৫৫-র ওই ব্যক্তি কাজ করতেন হাওড়ার মালিপাঁচঘড়া এলাকার একটি কারখানায়।

বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ তিনি যখন কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে একটি লরি। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট, ছিটকে পড়ে ছটফট করতে থাকেন তিনি। ধীরে ধীরে জমতে থাকে ভিড়। কিন্তু সবাই ব্যস্ত ছিলেন আলোচনায়। কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাননি ধীরেনকে। ঘটনাস্থল থেকে মালিপাঁচঘড়া পুলিশ ফাঁড়ির দূরত্ব মাত্র ৪০ মিটার। ঘটনার কথা জানতে পেরে ফাঁড়ি খবর দেয় থানায়। থানা থেকে আসে পুলিশের জিপ। ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় কুড়ি মিনিট। পুলিশ প্রথমে আহতকে নিয়ে যায় টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে। সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল। বিকেলে সেখানেই মৃত্যু। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু হয়েছে ধীরেন নায়েকের।

ঠিক যেমনটা হয়েছিল দিল্লির রাজপথে। টেম্পোর ধাক্কায় ছিটকে পড়েন উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা মতিবুল। দেখেও না দেখে পাশ কাটিয়ে যায় অসংখ্য পথ চলতি মানুষ। অনেক পরে কাছে আসেন এক রিকশচালক। কিন্তু মতিবুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নয়, কিছু দূরে পড়ে তাকা তাঁর মোবাইল ফোনটি হস্তগত করার জন্য। শেষ পর্যন্ত, রাস্তায় পড়ে পড়েই মৃত্যু হয় মতিবুলের। সেই অমানবিকতারই নজির গড়ল হাওড়া!